হামলাকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ফাইন্যান্স বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে মারধর ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারসহ ৯দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষকরা।

আজ রোববার (১৭ নভেম্বর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে ‘নিপীড়ন বিরোধী ছাত্র-শিক্ষক ঐক্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’র ব্যানারে মানববন্ধন করে তাঁরা।

শিক্ষকদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো- ‘দায়িত্ব অবহেলার জন্য হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন, ক্যম্পাসে কোন শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হলে মামলাসহ সকল ব্যয়ভার বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে বহন করা, আবাসিক হলগুলো সিসিটিভির আওতায় আনা, হলগুলোতে বৈধ সিট বণ্টন করা এবং হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হলে সিট বণ্টন ও আবাসনে কোন ছাত্র সংগঠনের হস্তক্ষেপের সুযোগ না দেয়া, হলে অবৈধভাবে বসবাসরতদের বের করে দেয়া, রাজনৈতিক মত ভিন্নতার কারণে কোন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারির সাথে অসদাচরণ না করা এবং তাদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেয়া।’

মানববন্ধনে সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে তার দৃশ্যমান বাস্তবায়ন আমরা দেখতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন তারা জানে কারা এসব অপকর্ম করতে পারে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে এসব ঘটনা দূর করা সম্ভব।

একই কথা বলেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আহমেদ ইমতিয়াজ। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান উপকরণ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন সময় তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, মারধর করা হচ্ছে। কিন্তু যারা করছে তাদের কোন বিচার হচ্ছে না। সরকার বিরোধী কোন কর্মকান্ড ঘটলে প্রশাসন শক্ত হাতে তা দমন করেন। কিন্তু কোন শিক্ষার্থীর উপর হামলা করা হলে তখন আপনারা নিশ্চুপ ভুমিকা পালন করেন।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বীরত্ব দেখানোর অনেক জায়গা আছে। কে কতটুকু পড়তে পারে, পড়াতে পারে, গবেষণায় অবদান রাখতে পারে এগুলো নিয়ে বাহাদুরি করা যেতে পারে। কিন্তু আমরা আজকাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এসব বীরত্ব দেখতে পাই না। বিশ্ববিধ্যালয়ে শিক্ষা সন্ত্রাস একসাথে চলতে পারে না। আপনারা নিপীড়নের শিকার ব্যক্তির অভিশাপকে ভয় করুন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলো ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর জিম্মাদার। আপনারা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আমরা এভাবে শিক্ষার্থীদের নিয়ে দাঁড়াতে চাই না। কিন্তু কোন অন্যায় দেখলে আমরা এভাবে দাঁড়িয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাবো, এটা আমাদের অঙ্গিকার।

এসময় পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোর্শেদুল ইসলাম বলেন, সোহরাবের ঘটনায় হল প্রশাসনের দ্বায়িত্ব অবহেলা রয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নামধারী সন্ত্রাসীদের স্থায়ী বহিষ্কার চাই। এসব সন্ত্রাসীদের লাগাম টেনে ধরতে হবে। নয়তো তারা আরও হিংস হয়ে উঠবে।

আরবী বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসউদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা আফরীনা মামুন, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আখতার বানু পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ শামস্ বিন তারিক, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আতিকুর রহমান পাটোয়ারী, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সিন্ডিকেট সদস্য মো. মনিরুর হক, ফিসারিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহা. ইয়ামিন হোসেন প্রমুখ।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রাবি প্রতিনিধি মো: মুজাহিদ হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.