হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে অতিথি পাখি রাজশাহীতে

নিজস্ব প্রতিবেদক: হাজার হাজার মাইল পথ উড়াল দিয়ে প্রতিবছরই অতিথি রাজসরালী পাখি আসে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আমগাছী গ্রামের একটি ডোবায়। সেই অতিথি পাখি এসে অস্থায়ী আবাসও গড়ে তুলেছে নানা প্রজাতির পাখির দল। এদের মধ্যে রাজসরালীর সংখ্যা বেশি। পাখির সুরক্ষায় গ্রামবাসীও বেশ সচেতন।
অতিথি পাখি শিকার ও ধরা থেকে গ্রামবাসী মিলে করেছে কমিটি গঠন। এসব পাখিদের কলতানে এখন মুখরিত দুর্গাপুরের আমগাছী গ্রামের ওই ডোবা।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অক্টোবর মাসের শুরু থেকে দুর্গাপুর উপজেলার আমগাছী বাজারের পাশেই একটি ডোবাতে হাজার হাজার অতিথি পাখি আসতে থাকে। এদের মধ্যে রাজসরালী পাখি বেশি। কেউ উড়ে যাচ্ছে, কেউ আবার উড়াল দিয়ে এসে ডোবায় পড়ছে। পাখিদের কলতান শুনছেন আশপাশের গ্রামবাসী ও বাজারে আসা মানুষ। এলাকার মানুষ, পথচারী এবং দুর-দুরান্তে থেকে আসা পাখি প্রেমীরা এক নজর হলেও পাখির ঝাঁক দেখতে এখন ভিড় জমাচ্ছেন। এই ডোবা থেকে আগামী ফেব্রয়ারী মাসের শেষ দিকে শীতের প্রকোপ কমলেই পাখিগুলো আবার চলে যাবে বলে জানালেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতেই এ পাখিরা ছুটে আসে এ দেশে। শীতপ্রধান দেশ রাশিয়ার সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, চীনের জিনিজিয়াং ও ভারত মহাসাগরে তীব্র শীত পড়ে এই সময়ে। জীবন বাঁচানোর তাগিদে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম শীতের এই দেশটিকে অতিথি পাখিরা সাময়িক আবাসভূমি হিসেবে বেছে নেয়। শীত শেষ হলে আবার তারা নিজেদের দেশে ফিরে যায়। অনেক পাখি থেকেও যায় নিরাপদ আশ্রয় করে। রাজসরালীর পাশাপাশি এখন খয়রা চখাচখি, বালিহাঁস, ছোট সারস, বড় সারস, কাদাখোঁচা, নিশাচর ডুবুরি, গায়ক রেন, পাতিকুট প্রভৃতি ক’জাতের পাখি এসেছে দুর্গাপুরের এ ডোবায়।
গ্রামবাসী জানান, আমগাছী গ্রামের এই ডোবায় অতিথি পাখি আসে তিন বছর ধরে। লোকালয়ের ভেতরে অবস্থিত এ ডোবায় গত বছরও এসেছিল এসব পাখি। শীতের শেষ তারা আবার চলে যায়। তবে এবার আরও বেশি পাখি এসেছে অতিথি হয়ে। একমাস আগে থেকে এসব পাখি আসতে শুরু করেছে। পাখিদের বিচরণ, ওড়াউড়ি আর কলতানে এখন সবসময় মুখর থাকে গ্রামটি। স্থানীয়ভাবেও এ পাখিগুলোকে যাতে কেউ বিরক্ত না করে সেজন্য দেখভাল করা হচ্ছে। পাখি ঘিরে এ গ্রামে এখন বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছে।
আমগাছী এলাকার বাসিন্দা তৌহিদুল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, অতিথি পাখির আগমনে এই এলাকার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করেছে। দিন-রাত পাখিদের কিচিরমিচির শুনলে মনে হবে যেন এ এক গহীন অরণ্য। অতিথি পাখিগুলো কেউ যদি শিকার করতে না পারে এ জন্য এলাকাবাসীও সচেতন।
আমগাছী বাজার হাট কমিটির সভাপতি আবু বাক্কার ছিদ্দিক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এখানে পাখি শিকার বা উত্যাক্ত করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রতিবছরই অতিথি পাখি আসছে। এলাকাবাসী এই পাখি গুলোকে সুরক্ষা দেওয়ায় প্রতিবছরই পাখির সংখ্যা বাড়ছে। এজন্য হাট কমিটির লোকজন অতিথি পাখির সুরক্ষায় কমিটি গঠন করছে।
তিনি বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই অতিথি পাখি দেখতে আসেন। কেউ ছবি তুলেন আবার কেউ ভিডিও করেন। তবে কমিটির লোকজন কাউকে পাখি শিকার বা উত্যাক্ত করতে দেয় না। শীতের এই অস্থায়ী পাখিগুলো শীত কমলে আবার তাদের গন্তব্য চলে যাবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.