হবিগঞ্জে শিল্প-কারখানার দূষণে মরে যাচ্ছে যে নদী

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ জেলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সুতাং নদী। ৮২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর এই সুতাং নদীটি বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী।

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে উৎপত্তি লাভ করে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে নদীটি। তারপর লাখাই উপজেলার কালনী নদীর সাথে মিশে গেছে।

লক্ষ করলে দেখতে পারা যায়, নদীর পানির খুব বেহাল অবস্থা। বিভিন্ন কল কারখানা বিষাক্ত বর্জ্য এবং মানুষের অসচেনার কারনে দিন দিন সুতাং নদীর পানি নষ্ট ও কালো রঙের হয়ে যাচ্ছে।

হবিগঞ্জ জেলার বিশাল এলাকা নিয়ে কল কারখানা গড়ে উঠলেও কার্যত এগুলোকে নিয়ন্ত্রণের কার্যকর কোন পদক্ষেপ নাই। কলকারখানার মাধ্যমে যেমন শব্দ দূষন,বায়ু দূষন,মাটি দূষন তেমনি পানি দূষনও হচ্ছে।
এইগুলা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। পানি দূষন এর কারনে জলজ প্রাণী দেশিয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। দূষিত বর্জ্যের কারনে সুতাং নদীর পানি কুচকুচে কালো হয়ে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং তলদেশে বিষাক্ত বর্জ্যের স্তরপড়ে গেছে।

অসহনীয় দুর্গন্ধ এবং দূষণের ফলে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে গেছে। শ্বাস কষ্ট চর্ম রোগ সহ বিভিন্ন রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। সুতাং নদী দিয়ে বর্জ্য নিষ্কাশন বাড়তে থাকায় নদীর দু’পাশের প্রায় ৪০ টি গ্রামের মানুষ দিন দিন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। নিষ্কাষিত বর্জ্যে বিষাক্ত  রাসায়নিক দ্রব্য থাকার ফলে নদীর মাছ মরে ভেসে উঠেছে।

পানি খেয়ে গবাদী পশু মারা যাচ্ছে। মাছ খেয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আমাদের পরিবেশ, মানুষ,গবাদী পশুকে রক্ষা করতে হলে কল কারখানার নিয়ন্ত্রণ আরোপ জরুরি।

সুতাং নদী বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হবিগঞ্জ জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৮৫ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৩৬ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক সুতাং নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ৮২।

সুতাং নদীর গভীরতা ৪ মিটার, সুতাং রেলওয়ে ব্রিজের নিকট পরিমাপকৃত। অববাহিকার আয়তন ৪০০ বর্গকিলোমিটার। নদীটিতে সারাবছর পানিপ্রবাহ থাকে। তবে জোয়ারভাটার প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত এই নদী।

সরেজমিনে অলিপুর শিল্প এলাকার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, চরম শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় বসবাসকারীরা। জেলার অলিপুরে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা কলকারখানার দূষিত বর্জ্য নদীটিতে ফেলা হচ্ছে।

এখানে গড়ে উঠা অধিকাংশ শিল্প প্রতিষ্ঠানে নেই প্রয়োজনীয় বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি)। যেসব কোম্পানিতে ইটিপি রয়েছে সেগুলো অতিরিক্ত খরচের ভয়ে নিয়মিত চালানো হচ্ছে না।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হবিগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ জুনাইদ চৌধুরী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.