২০ জনকে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছে ফিলিস্তিনে

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল এবং গাজা সিটির আল শিফা হাসপাতালের পাশে গণকবরের সন্ধান মিলেছে। গণকবর থেকে এখন একের পর এক মরদেহ বের করা হচ্ছে। যেগুলোর বেশির ভাগই বিকৃত হয়ে গেছে। যখন এসব গণকবর থেকে বেরিয়ে আসছে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের মরদেহ, ঠিক তখনই সামনে এলো রোমহর্ষক ঘটনা।
এসব গণকবর থেকে পাওয়া মরদেহের অন্তত ২০ জনকে জীবিত কবর দেওয়া হয় বলে জানা যায়। এছাড়া গণকবর থেকে উদ্ধার করা মরদেহের ৮৫ শতাংশই অজ্ঞাত। তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি বলে বৃহস্পতিবার জানান খান ইউনিসের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান ইয়েমেন আবু সোলায়মান।
এদিকে গাজার গণকবর থেকে শত শত লাশ উত্তোলনের খবরে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক আতঙ্কিত বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলি সৈন্যরা নতুন করে গাজার রাফাহতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
ফিলিস্তিন সিভিল ডিফেন্সের সদস্য মোহাম্মদ মুঘাইয়ের জানিয়েছেন, এসব গণকবরে পাওয়া মরদেহের অন্তত ২০ জনকে জীবিত অবস্থায় কবর দেওয়ার আলামত পেয়েছেন তারা। তিনি বলেন, ১০টি মরদেহের হাত বাঁধা ছিল। অন্যদের শরীরে মেডিক্যাল টিউব সংযুক্ত ছিল। বিষয়টি নির্দেশ করছে তাদের খুব সম্ভবত জীবিত অবস্থায় কবর দেওয়া হয়।
সিভেল ডিফেন্সের এই সদস্য আরও বলেন, যে ২০ জনকে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি তাদের মরদেহ ফরেনসিক পরীক্ষা করতে হবে। খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের গণকবর থেকে শিশুদের মরদেহও উদ্ধার করা হয়েছে। মোহাম্মদ মুঘাইয়ের শিশুদের বিকৃত মরদেহের ছবি প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, গণকবরে কেন শিশুরা? এসব প্রমাণ নির্দেশ করছে ইসরায়েলি সেনারা মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে। দুই সপ্তাহ আগে খান ইউনিস থেকে সরে যায় দখলদার ইসরায়েলের সেনারা। এরপর সেখানে ফিরে যান সাধারণ ফিলিস্তিনিরা। তারা গিয়ে দেখতে পান খান ইউনিসকে একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে দখলদাররা। তাদের বর্বরতা থেকে বাদ যায়নি হাসপাতালও। সাধারণ মানুষকে হত্যা করে হাসপাতালের পাশেই পুঁতে রেখেছে তারা।
এদিকে খান ইউনিসের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান ইয়েমেন আবু সোলায়মান জানান, গাজার গণকবর থেকে উদ্ধার করা ৩৯২টি মরদেহে মধ্যে মাত্র ৬৫টির পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। আবু সোলায়মান বলেন, বাকি মৃতদেহগুলো বিকৃত হওয়ার কারণে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, কিছু ভুক্তভোগী নির্যাতনের শিকার হয়েছিল বলেও মনে করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে এই আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আবু সোলায়মান বলেন, মানবিক সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোকে এই অপরাধ পরীক্ষা করার জন্য গাজায় যেতে দেওয়া হোক।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ এ সপ্তাহে খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের গণকবরে শত শত লাশ পাওয়ার খবর জানান। ইসরায়েলি সেনারা হামলা চালিয়ে যাওয়ার পর সেখানে এমন গণকবরের সন্ধান মিলেছে। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ এমন গণকবর দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে।
আইডিএফ এর ভাষ্য, জিম্মিদের লাশ রয়েছে এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা হাসপাতাল প্রাঙ্গণের কবরে থাকা লাশগুলো তুলে পরীক্ষা করে আবার কবরে রেখে দেয়। এ সময় লাশের কোনো অমর্যাদাও তারা করেনি বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.