হবিগঞ্জে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জে দুই সাংবাদিককে জড়িয়ে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বানিয়াচং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমের দায়ের করা মামলার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু হয়েছে। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন আখ্যায়িত করে দ্রুত মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সর্বস্তরের সাংবাদিকরা। না হলে দিয়েছেন বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি।

আজ শনিবার (২৭ জুন) বেলা ১২টায় টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, হবিগঞ্জের ব্যানারে জেলা প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ফোরামসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন এতে অংশ নেয়। উপস্থিত ছিলেন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার দুই শতাধিক সাংবাদিক।

বক্তারা বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য ও সংবাদ নীতিমালা মেনে মৎস্য কর্মকর্তা আলমের দুর্নীতি সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায়। অথচ হবিগঞ্জের দু’জন সংবাদিককে জড়িয়ে হয়রাণীর উদ্দেশ্যে  বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন ওই সরকারি কর্মকর্তা। এ মামলা মিথ্যা-ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দ্রুত প্রত্যাহার না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। মৎস্য  কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

পরবর্তী আন্দোলনের ঘোষণার আশ্বাস দিয়ে সকল সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থেকে এই হয়রানীমূলক মামলার প্রতিবাদ জানান জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি।

টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সভাপতি বলেন, সত্য সংবাদ প্রকাশের পরও মৎস্য কর্মকর্তা বিতর্কিত আইনে মামলা দায়ের করেছেন। শীঘ্রই এই মামলা তুলে না নিলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাবান মিয়া বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সৎ দুইজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের করেছেন তা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। শীঘ্রই এই মামলা প্রত্যাহার না করলে পরবর্তীতে এর দায়ভার নিতে হবে ওই দুর্নীতিবাজ মৎস্য কর্মকর্তাকে।

টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন হবিগঞ্জের সভাপতি রাসেল চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম সুরুজ আলীর পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ ইসমাইল, সাধারন সম্পাদক সায়েদুজ্জামান জাহির, সাবেক সভাপতি রুহুল হাসান শরীফ, শুয়েব চৌধুরী, মোহাম্মদ নাহিজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিয়াদ, নির্মল ভট্টাচার্য্য রিংকু, শাহ ফখরুজ্জামান, সাংবাদিক ফোরাম সভাপতি মোঃ এমদাদুল ইসলাম সোহেলসহ বাংলাদেশ টেলিভিশনের আলমগীর খান, সময় টিভির হবিগঞ্জ প্রতিনিধি রাশেদ আহমদ খান, যমুনা টিভির প্রদীপ দাশ সাগর, একাত্তর টিভির শাকীল চৌধুরী, যায়যায়দিনের নূরুল হক কবির, নিউজ টোয়েন্টিফোর এর শ্রীকান্ত গোপ, এসএ টিভির সেলিম চৌধুরী, মোহনা টিভির ছানু মিয়া, মাই টিভির মোশাহিদ আলমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার দুই শতাধিক সাংবাদিক।

কয়েকটি সামাজিক সংগঠনও এই মানববন্ধনে অংশ নেন।

বানিয়াচং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম এক কর্মস্থলে টানা দীর্ঘদিন চাকরির সুবাধে বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন, এমন অভিযোগ এনে এবং প্রতিকার চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে স্থানীয় লোকজন।

এনিয়ে বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন  করেন আলম। কিন্তু এখতিয়ার বহির্ভূত হওয়ায় মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত।

পরবর্তীকালে তিনি ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে এতে আসামী করা হয়, মাছরাঙা টেলিভিশনের হবিগঞ্জ প্রতিনিধি চৌধুরী মো. মাসুদ আলী ফরহাদ ও বাংলানিউজের ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বদরুল আলমসহ আরও কয়েকজনকে জড়িয়ে মামলা দায়ের করেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হবিগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ জুনাইদ চৌধুরী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.