”স্বল্পোন্নত-উন্নয়নশীল দেশ’র জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিন’র ব্যবস্থা করতে হবে”

বিটিসি নিউজ ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী চলমান করোনা মহামারিতে সৃষ্টি হওয়া সংকটকালীন পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে একটি সু-সমন্বিত রোডম্যাপ তৈরী করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি এক বহুমুখী বৈশ্বিক সমস্যা তৈরী করেছে এবং এটি বৈশ্বিকভাবেই সমাধান করা উচিত।’

আজ শুক্রবার (০৬ নভেম্বর) এশিয়া ইউরোপ মিটিং বা আসেম এর সদস্য দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের ১৪তম আন্তর্জাতিক সম্মেলন ভার্চুয়াল উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ এবারের এই ভার্চুয়াল আসেম সম্মেলনের আয়োজন করেছে। উদ্বোধনী আয়োজনে আগে থেকে ধারণকরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ভিডিও বার্তা হিসেবে প্রচার করা হয়।

‘কোভিড-১৯ সমাধান: শক্তিশালী, টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ভারসাম্যপূর্ণ পুনরুদ্ধার নিশ্চিতকরণ’ প্রতিপাদ্যে এবারের আসেম অর্থমন্ত্রীদের ১৪তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

শিগগিরই বিশ্ব কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে কার্যকর ভ্যাকসিন পেতে চলেছে আশা জানিয়ে শেখ হাসিনা স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান। এ ক্ষেত্রে ধনী দেশ, বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি) ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে (আইএফআই) উদার সমর্থন নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী ধনী দেশ, এমডিবি ও আইএফআইগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। কঠিন এ সময়ে সমৃদ্ধির পথে থাকা যেকোনো বাধা জয় করতে বৃহত্তর সহযোগিতার প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, যেকোনো সংকট উত্তরণে বিচ্ছিন্নতা নয়, বরং বাড়াতে হবে সহায়তার হাত।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উন্নত দেশগুলোকে শুল্ক-মুক্ত ও কোটা-মুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা বিষয়ে নিজেদের পূরণ না করা প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করতে হবে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আক্রান্ত স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে উদ্ধারে জি-৭, জি-২০, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থাভুক্ত (ওসিসিডি) দেশগুলো, এমডিবি ও আইএফআইগুলোকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি সব দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অর্থনীতিতে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এবং বেশির ভাগ মানুষ আয় এবং কাজ হারিয়েছেন।

অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ গত এক দশকে টেকসই উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং কিছু আর্থ-সামাজিক সূচকেও অসাধারণ অগ্রগতি পেয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন যে সরকার বাংলাদেশকে ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্য-আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করতে ‘ভিশন ২০৪১’ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ এসডিজি অর্জনে ঠিক পথে ছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

কিন্তু করোনাভাইরাস ছড়ানো রোধে সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও মহামারিটি অগ্রগতির ওপর মারাত্মক বাধা সৃষ্টি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে মুক্তি পেতে বিরাট প্রণোদনা প্যাকেজ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, কয়েক মাস প্রাথমিকভাবে ভোগার পরে দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হতে শুরু করেছে।

তিনি রপ্তানি, রেমিটেন্স ও কৃষি উৎপাদনে সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন। এতে দেখা যাচ্ছে যে অর্থনীতি টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে ফিরে আসছে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মূল বক্তব্য দেন বিশ্বব্যাংক ও এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং আইএমএফর এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপপরিচালক।

জার্মানি, স্পেন, পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, থাইল্যান্ড, জাপান, চীন, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ আসেম সদস্য দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা এবারের সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.