সোনাইমুড়িতে কালোবাজারে সার বিক্রি, হতাশায় কৃষকেরা

ফাইল ছবি
সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে কালোবাজারে সার বিক্রি করায় হতাশাগ্রস্থ কৃষকরা। সাব-ডিলাররা অতিরিক্ত মূল্যে কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করারও অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে বিসিআইসি সার ডিলাররা চাহিদা দেখিয়ে সার উত্তোলন করে কালোবাজারে বিক্রি করছে বলে জানা যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিস ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ তদারকি না করায় এসব অনিয়ম হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।
সোনাইমুড়ী উপজেলার বারগাঁও ইউনিয়নের খুচরা সার ডিলার শহিদুল ইসলাম এ সংক্রান্ত অনিয়মের বিরুদ্ধে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে বিগত ১ জানুয়ারি ২০২৩  তারিখে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
সূত্রে জানা যায়, সরকার ইউরিয়া সারের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে প্রতি কেজি ২২ টাকা। তবে সেই সার কৃষক পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ২৬ টাকা। অন্যদিকে ১৫ টাকা কেজির এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) সার বিক্রি হচ্ছে ২৪ থেকে ২৬ টাকায়।
এ উপজেলায় প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ১০ জন বিসিআইসি সার ডিলার থাকার নিয়ম রয়েছে। প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ৯ জন করে খুচরা সার ডিলার থাকার বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। কয়েকটি ইউনিয়নে কাগজে-কলমে বিসিআইসি সার ডিলার থাকলেও তাদের লাইসেন্স দিয়ে সার উত্তোলন করে থাকেন পৌর বিসিআইসি সার ডিলার আনোয়ার হোসেন। তিনি পুরো উপজেলা সার নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। বিভিন্ন সময়ে সারের সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রি করছে এ ডিলার। আবার ডিলার নয় এমন ব্যক্তির কাছেও এ বি সিআই সি সার ডিলার অতিরিক্ত মূল্যের সার বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। জয়াগ  ইউনিয়নের বিসিআইসি সার ডিলার হোসেনের বিরুদ্ধেও এইসব অভিযোগ বিস্তর। সেই ইউনিয়নের সার বিক্রি না করে পৌরসভার কালি বাড়ি রোডে বসে কালোবাজারে সার বিক্রি করছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে চাহিদার বিপরীতে সব রকমের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে এবং সব ধরনের সারের মজুতই গত বছরের এ সময়ের তুলনায় বেশি। যেমন ইউরিয়া মজুত আছে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টন, যা গত বছরের এই সময়ের চেয়ে ২৮ হাজার টন বেশি।
কৃষকদের অভিযোগ, তাদের কাছ থেকে সারের দাম বেশি নেওয়া হলেও ডিলাররা কোনো রশীদ দিচ্ছে না। কেউ কেউ রশিদ দিলেও তাতে সরকার নির্ধারিত দাম দেখাচ্ছেন। প্রতিবাদ করলে সার বিক্রি করবেন না বলে হুমকি দিচ্ছেন। ক্রেতার কাছে বিক্রি করা সার কেড়ে নিয়ে রেখে দিচ্ছেন বলেও জানা যায়।  ডিলারদের কাছে এভাবে জিম্মি হয়ে কৃষকরা অসহায়ত্ব বোধ করছেন। তবে এ বিষয়ে  ডিলারদের দাবি, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ার কারণে বাজারে সারের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামেই সার বিক্রি করছেন তাঁরা।
কৃষকেরা বলছেন, সার কিনতে গেলে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সংকটের কথা বলেন। তবে দাম বেশি দিলেই সার বের করে দিচ্ছেন। এ ছাড়া কিছু কিছু ডিলার দোকানে মূল্যতালিকা ঝুলানোর বিধান থাকলেও দেখাচ্ছে না তালিকা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়,  সরকার প্রতি বস্তা (৫০ কেজির বস্তা) টিএসপি সারের খুচরা মূল্য ১ হাজার ১০০ টাকা (২২ টাকা প্রতি কেজি), এমওপি প্রতি বস্তা ৭৫০ টাকা (১৫ টাকা কেজি), ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) ও ইউরিয়া প্রতি বস্তা ৮০০ টাকা (১৬ টাকা কেজি) নির্ধারণ করে দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূরে আলম বিটিসি নিউজকে জানান, এ উপজেলায় সাড়ে সংকট নেই। তবে ডিলার নয় এমন ব্যক্তি অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রির অভিযোগ পেয়েছেন। ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
বারগাঁও  ইউনিয়নের সাব ডিলার শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বিটিসি নিউজকে জানান,কালা বড়ুয়া ও জহির নামে দুই ব্যক্তি অন্যস্থান থেকে সার কিনে এনে অতিরিক্ত মূলে সার বিক্রি করছে। এ নিয়ে তিনি ঐ কৃষক অভিযোগ করেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি মোরশেদ আলম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.