সুবর্ণচরে উৎপাদিত শিমের বিচি রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে

নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি: রপ্তানি হচ্ছে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে উৎপাদিত শিমের বিচি। কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে তা আমেরিকা, চীন আর মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠাচ্ছে দেশি কোম্পানিগুলো। এতে দেশের অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা যুক্ত হওয়ার সঙ্গে স্বচ্ছলতা ফিরেছে কৃষকদের পরিবারে। সংরক্ষণাগারসহ বাজার ব্যবস্থা উন্নয়নে উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের।
প্রিয় সবজি শিমে পূর্ণ গাঢ় সবুজ গাছ। সেসব সংগ্রহে ব্যস্ত কিষানিরা। বাড়ির বারান্দায় সেই শিমের বিচি আলাদা করতে বসেছেন নারীরা। এ যত্নের কারণ পরিপুষ্ট এসব দানা যাবে আমেরিকা ও চীনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে।
এ উপজেলার শিম চাষিরা ব্যস্ত সময় কাটচ্ছেন রপ্তানির এসব পণ্য নির্ভেজালভাবে প্রস্তুত করে দিতে। পানিতে ধুয়ে বস্তা ভর্তি শিমের বিচি বাজারে এনে তুলে দেন পাইকারদের হাতে। এক চাষি বলেন, এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১২ হাজার টাকার শিমের বিচি বিক্রি করেছি। আরও ৪০ হাজার টাকার বিক্রি করতে পারবো।
সুবর্ণচর ছাড়া কোম্পানিগঞ্জ, হাতিয়া ও সদরে উৎপাদিত এসব শিমের বিচি সংগ্রহ করে পাইকাররা নিয়ে যান রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানে। তবে এমন সম্ভাবনার মাঝেও নানা প্রতিকূলতার কথা জানালেন পাইকার ও কৃষকরা।
নুর উদ্দিন নামের এক কৃষক বলেন, নোয়াখালীতে সেরকম কোনো কিছু নেই। থাকলে কৃষকরা আরও ভালো দাম পেতো। দূরে না গিয়ে এখান থেকেই পাঠানো যেতো। সিরাজ উদ্দিন নামের আরেক কৃষক বলেন, আশপাশের কিছু সড়ক খারাপ আছে। ফলে বড় গাড়ি এখানে ঢুকতে পারে না। ছোটগুলো ঢুকে, কিন্তু তাতে বেশি পণ্য দেয়া যায় না।
এ খাতকে আরও গতিশীল করতে সংরক্ষণাগারের দাবি কৃষিবিদদের। যদিও রপ্তানি বাজার আরও বাড়াতে নানা উদ্যোগের কথা জানালেন কৃষি কর্মকর্তারা। নোয়াখালী পিকেএসফের কৃষিবিদ শীবভ্রত ভৌমিক বলেন, এখানে কোনো সংরক্ষণাগার নেই। সরকারি-বেসরকারিভাবে সেটা স্থাপন করা গেলে কৃষক উপকৃত হবেন। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাও লাভবান হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হারুন অর রশিদ বিটিসি নিউজকে বলেন, সমগ্র উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে। যে সকল কৃষক আগাম শিম চাষ করেন তারা দাম ভালো পাওয়ায় প্রথমে সবজি হিসেবে শিম বিক্রি করেন। যখন দাম কমে যায় তখন কৃষক বিচি বিক্রি করেন বলে জানান তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল হক বিটিসি নিউজকে বলেন, কৃষকরা যেন বাজারটা ধরতে পারে, আমরা সেই চেষ্টা করছি। তাদের বিশুদ্ধ সার, কীটনাশক দেচ্ছি। রাস্তাঘাট নিয়েও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছি।
নোয়খালী থেকে প্রতি মৌসুমে শিমের অন্তত ৪০০ টন বিচি রপ্তানির উদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকাররা। যার বাজার প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকারও অধিক।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল (শিমুল)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.