সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে হট্টগোল, ধাক্কাধাক্কি

বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের প্রথম দিনের ভোটগ্রহণ আজ বুধবার শুরু হয়নি। এদিন আওয়ামীপন্থীদের সঙ্গে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হইচই, হট্টগোল, ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে।
আজ বুধবার (১৫ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনের (ভোটকেন্দ্র) ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।
ঘোষিত তফসিল অনুসারে, সমিতির দুই দিনব্যাপী এ নির্বাচন আজ ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার হওয়ার কথা। আজ সকাল ১০টায় ভোট গ্রহণ শুরুর কথা ছিল, কিন্তু নির্বাচন পরিচালনা-সংক্রান্ত কমিটি নিয়ে সকাল থেকেই সমিতির মিলনায়তনের ভেতরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তাপ ছড়ায়। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। ‘আগে চাই কমিশন, তারপরে নির্বাচন’ বলে এ সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মিলনায়তনের ভেতরে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সকাল পৌনে ১০টার দিকে মিলনায়তনে গিয়ে দেখা যায়, বিএনপি-সমর্থিত প্যানেল থেকে মনোনীত সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুসের সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা-সংক্রান্ত উপকমিটির একজন সদস্যের কথা-কাটাকাটি চলছে। অন্যদিকে উপকমিটির পক্ষ থেকে বারবার প্রার্থীদের নির্ধারিত জায়গায় যেতে বলা হচ্ছিল।
এ সময় আওয়ামী লীগ–সমর্থিত আইনজীবীরা ‘ইয়েস, ইয়েস’ বলে রব তোলেন। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত এক আইনজীবীর সঙ্গে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির। তিনি আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্যানেল থেকে এবারের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী।
কিছুক্ষণ পর বিএনপি-সমর্থিত প্যানেল থেকে সভাপতি প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন বলেন, ‘কমিশন বিষয়ে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত নির্বাচন হবে না।’ এ সময় বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীরা ‘ইয়েস, ইয়েস’ বলে রব তোলেন। এর পক্ষে-বিপক্ষে হইচই ও হট্টগোল শুরু হয়। বেশ কিছুক্ষণ তা চলে।
পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থানের প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেলা ১১টার ৪০ মিনিটের দিকে সমিতির মিলনায়তনে পুলিশ প্রবেশ করে। এ সময় কয়েকজন সাংবাদিক ও আইনজীবী পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হন।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন- এটিএন নিউজের রিপোর্টার জাবেদ আক্তার, আজকের পত্রিকার রিপোর্টার এস এম নূর মোহাম্মদ, জাগো নিউজের রিপোর্টার ফজলুল হক মেধা, মানবজমিনের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার আব্দুল্লাহ আল মারুফ, এটিএন বাংলার ক্যামেরাপারসন হুমায়ুন কোভিদ, সময় টিভির ক্যামেরাপারসন সোলাইমান স্বপন, ডিবিসির ক্যামেরাপারসন মেহেদী হাসান মিম ও বৈশাখী টিভির ক্যামেরাপারসন ইব্রাহিম।
সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের এই সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটার রয়েছেন প্রায় ৯ হাজার।
উল্লেখ্য, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির এই নির্বাচন পরিচালনার জন্য গত ২ মার্চ যে সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছিল তার আহ্বায়ক ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাবেক বিচারপতি মো. মনসুরুল হক চৌধুরী। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সোমবার রাতে তিনি পদত্যাগ করেন। দেখা দেয় নতুন জটিলতা। আজ যথারীতি ভোটগ্রহণ শুরু করতে বিএনপি-আওয়ামী লীগ দু’পক্ষই মঙ্গলবার নতুন দুজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করে।
আওয়ামী লীগপন্থীদের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামানকে এবং বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের পক্ষ থেকে সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি এ এস এম মোক্তার কবিরকে নির্বাচন কমিশনার ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার রাত ১০টা পর্যন্ত বার ভবনে দু’পক্ষের মধ্যে চরম হট্টগোল ও উত্তেজনা চলছিল। মঙ্গলবার সারাদিন দু’পক্ষের মধ্যে আক্রমণ ও টান টান উত্তেজনা থাকায় রাত ৯টার দিকে বার ভবনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি মো: ফারুক আহম্মেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.