সাড়ে তিন লাখ মানুষের সেবায় তিন চিকিৎসক


নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট চলছে। এতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। রোগীদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।

মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে উপজেলার তিন লাখ লোকের চিকিৎসা সেবা । তিন জন চিকিৎসক দিয়ে কোনোমতে চলছে হাসপাতালটি। ফলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় গ্রাম আছে ১২৮টি গ্রামের ৩ লাখেরও বেশি মানুষ ।

গ্রামবাসীদের জন্যে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবা একেবারেই অপ্রতুল । স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির যেদিকে তাকান শুধু নেই আর নেই । জনবলের অভাবে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা ভেঙ্গে পড়েছে।

স্বাস্থ্য কমপেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২২ মে স্বাস্থ্য কমপেক্সটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। অনুমোদিত পদ ২১টি। এর মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের (মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, অ্যানেসথেসিয়া, শিশু অর্থোপেডিকস, কার্ডিওলজি, চক্ষু, ইএনটি) ১০টি ও আবাসিক চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে।

কাগজে-কলমে আছে ৭ জন চিকিৎসক। এই ৭ জনের মধ্যেও আবার তিনজন গত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে গেছেন। আর একজন গেছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। একজনকে নাটোর সদর হাসপাতালে প্রেষণে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপেক্সটি। অন্যদিকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংকট রয়েছে।

সুইপার, আয়া, ওয়ার্ডবয় না থাকার কারণেও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এ উপজেলায় প্রায় ৩ লাখ বাসিন্দা। এ ছাড়া অবস্থানগত কারণে সিংড়া, বড়াইগ্রাম, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও পাবনার চাটমোহর উপজেলার বড় একটি অংশের রোগীরা এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসে।

প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী বহির্বিভাগে টিকিট কাটে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনেকেই বিরক্ত হয়ে চিকিৎসা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যায়। এ ছাড়া প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০ জন রোগী ভর্তি থাকে।

বিভিন্ন এলকা থেকে আসা কয়েকজন রোগীর সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা ৫০ থেকে ১০০ টাকা ভাড়া দিয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছি। কিন্তু ডাক্তার সংকট থাকার কারণে আমরা আমাদের কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তারপরও এখানকার ডাক্তার যারা থাকেন তারা চেষ্টা করেন আমাদের যেন ফিরে না যেতে হয়।

কিন্তু র্দীঘক্ষন লাইন নিয়ে দাড়িয়ে থাকতে হয় অসুস্থ্য শরীর নিয়ে। দ্রুত এখানে পদ অনুসারে চিকিৎসক পদায়নের দাবি জানান এসব রোগীরা।

স্কুল শিক্ষক আব্দুল মজিদ বিটিসি নিউজকে জানান, বেলা ১১টা সময় সবাই টিকিট কেটে এক থেকে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেননি। তাই বিরক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন বলে জানান।সব ধরনের সুবিধা থাকার পরও শুধু চিকিৎসকের সংকটে গর্ভবতী নারীদের প্রজনন ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ২০০৯ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. যাকারিয়া বিটিসি নিউজকে জানান, চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি বরাবর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। পদায়ন করলেই সমস্যার সমাধান হবে।

তিনি বলেন, চিকিৎসক সংকট থাকলেও রোস্টার করে চেষ্টা করছি মৌলিক চিকিৎসা সেবা অব্যহত রাখতে।সিভিল সার্জন আজিজুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে তিনি অবগত আছেন। সাধ্যমতো এ-সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ আর রক্ষাণাবেক্ষনের মধ্য দিয়ে দ্রুত উপজেলার স্বাস্থ্যসেবার মান নিশ্চিতের দাবি এলাকাবাসীর।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.