সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই, সরকারের পতন ঘটাতে হবে : মির্জা ফখরুল

ঢাকা প্রতিনিধি: সময়ক্ষেপণ না করে সরকার পতনের জন্য জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এখন আর কালক্ষেপণ করার সুযোগ নেই। আসুন আমরা নিজেদের সংঘবদ্ধ করি। সমস্ত রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করি। সমস্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করি। একটা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে তাদের পরাজিত করার উদ্যোগ নিতে হবে।
আজ সোমবার (০৭ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে তারেক রহমানের ১৬তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। উত্তরাঞ্চল ছাত্রফোরামের এই সভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দাবি খুব পরিষ্কার। আমাদের প্রথম দাবি হচ্ছে গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। যিনি গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ নয় বছর স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন। আবার ১/১১ সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। তাকে মুক্তি দিতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার পরে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের নির্বাচন পরিচালনার মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। তাদের আর কোনো অধিকার নেই এই রাষ্ট্র পরিচালনা করার। আমরা মনে করি এই মুহূর্তে হাসিনা সরকারের পদত্যাগ করা উচিত। একই সঙ্গে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সরকার তারেক রহমানকে ভয় পায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারেক রহমানের যে অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে, এই দক্ষতার কারণেই তিনি অতি অল্পসময়ে সারাদেশে গণতান্ত্রিক শক্তি, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন। এই দক্ষতা তারা দেখেছে। যখন তাকে সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তখন তিনি তৃণমূল পর্যন্ত দেখাশোনা করেন। তখন তারা (আওয়ামী লীগ) পরিকল্পনা করতে থাকে যে, এই মানুষ যদি দেশে থাকে তাহলে তাদের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। তাই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়েছে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনটা এফআইআর-এ তারেক রহমানের নাম ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তদন্ত কর্মকর্তাদের পরিবর্তন করে তারেক রহমানের নাম ফাইলে যুক্ত করে নতুন করে তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। কোনো প্রমাণ তার বিরুদ্ধে নেই। যে বিচারক তাকে মুক্তি দিয়েছিলেন তাকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। শুধু তাকে নয়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা সাহেব, তাকেও দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে দুর্নীতি এখন এমন পর্যায়ে চলে গেছে, সাধারণ মানুষের এখন আর বেঁচে থাকার সুযোগ নেই। জিনিসপত্রের দাম এমনভাবে বাড়ছে, যেখানে আর বেঁচে থাকার সুযোগ নেই।
বিএনপর সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুছ আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা গোলাম মোর্শেদ, ছাত্রদল নেতা মতিউর রহমান প্রমুখ।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.