শহীদ জননী সুরাইয়া সালামের ইন্তেকাল, রাজশাহী প্রেসক্লাবের শোক

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালামের সহধর্মিণী এবং কালোরাতে অন্যতম দুই শহীদের জননী সুরাইয়া সালাম ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…..রাজিউন)
আজ বুধবার (০৭ জুলাই) সকাল ৭টার দিকে রাজশাহী নগরীর লক্ষিপুরস্থ নিজ মেয়ের বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে তিঁনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। সুরাইয়া সালামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে রাজশাহী প্রেসক্লাব।
আজ বুধবার সকালে রাজশাহী প্রেসক্লাব সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আসলাম-উদ-দৌলা এক যুক্ত বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়। যুক্ত বিবৃতিতে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ বলেন, শহীদ জননী সুরাইয়া সালাম নারীদের জন্য ছিলেন অনুপ্রেরণার।
তিঁনি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভাষাসৈনিক বেগম মনোয়ারা রহমানের সঙ্গে যৌথভাবে রাজশাহী অঞ্চলের দরিদ্র নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিভিন্ন জনসেবামূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে তিঁনি জায়গা করে নিয়েছিলেন সকলের হৃদয়ে। অত্যান্ত দানশীন একজন নারী ছিলেন সুরাইয়া সালাম। তাঁর কাছে এসে কখনো খালি হাতে ফিরে যেতে হতো না কাউকে। মহান মুক্তিযুদ্ধে হারিয়েছেন দুই সন্তানকে। তবুও শোক বুকে নিয়েই কাজ করেছেন দেশের জন্য, জনগণের জন্য। সমাজসেবার যাঁর ভূমিকা অনন্য।
বিশেষভাবে নারীদের জন্য সুরাইয়া সালামের অবদান কখনো ভুলা যাবে না। তবে দুঃখজনক বিষয়, জীবিত অবস্থায় তিঁনি রাষ্ট্রীয় কোনো মর্যাদা পাননি, দেয়া হয়নি রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি। বিবৃতিতে প্রেসক্লাব নেতারা শহীদ জননী সুরাইয়া সালামের মরোনত্তর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানান বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে।
আজ বুধবার (০৭ জুলাই) বাদ আসর নগরীর লক্ষিপুর ঝাউতলা জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে সুরাইয়া সালামের নামাজে জানাজা শেষে হেতম খাঁ গোরস্থানে সমাহিত করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, সুরাইয়া সালামের তিন ছেলে এবং ৫ মেয়ের মধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন দুজন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে কালোরাতে তার বড় ছেলে তৎকালীন ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ^বিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী সেলিমুজ্জামান সেলিম ও রাজশাহী কলেজের একাদশ শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী ওয়াসিমুজ্জামান ওয়াসিমকে পাক হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। আর তার স্বামী মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে দুই ছেলেসহ পরিবারের মোট পাঁচ সদস্য শহীদ হলেও রাজশাহী অঞ্চলে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধে।
বার্তা প্রেরক: আমানুল্লাহ আমান, সদস্য, রাজশাহী প্রেসক্লাব। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.