লেবানন’র বৈরুতে যে কারণে বিস্ফোরণ

ছবি: সংগৃহীত

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লেবাননের বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন চার হাজারের বেশি। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার (০৪ আগস্ট) বিকেলে সমুদ্র বন্দরের কাছে বোমা তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণ হয় বলে জানিয়েছেন দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান।

বিস্ফোরণের জন্য দায়ীদের চড়া মাশুল দিতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব। বিপর্যয় কাটাতে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কাছে সহযোগিতা চেয়েছে লেবানন সরকার। এদিকে, ইসরাইল সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বিস্ফোরণের সঙ্গে তাদের কোন যোগসূত্র নেই।

গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেলে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে লেবাননের রাজধানী বৈরুত। মুহূর্তেই আগুন ধরে যায়। আশপাশের বাড়িঘর উড়ে যায়। ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় বেশ কয়েকটি গাড়ি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছোটাছুটি শুরু করেন আতঙ্কিত মানুষ।

বিস্ফোরণের পরপরই ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডুলি দেখা যায় বৈরুতের আকাশে। অন্তত দেড়শো মাইল দূর থেকে শোনা যায় শব্দ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কিছুক্ষণের জন্য তাদের কান বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই গাড়ির কাঁচ, বাড়িঘরের জানালা খসে পড়ে। ভেঙে পড়ে বারান্দা । ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে অনেকেই আটকা পড়ে।

এর আগে এমন বিস্ফোরণ কেউ দেখেনি বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। এবার পুরো বৈরুত এমনকি বৈরুতের বাইরেও ক্ষতি হয়েছে।

লেবানিজ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান জানিয়েছেন, সমুদ্র বন্দরের কাছে একটি রাসায়নিক গুদাম থেকে বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয়েছে। কয়েকটন নাইট্রেট বিস্ফোরিত হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।

দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী হামাদ হাসান জানান, বিস্ফোরণের পরপরই ছিন্নবিচ্ছিন্ন মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। বৈরুত হাসপাতালের করিডোরও ভরে গেছে আহত ও রক্তাক্ত মানুষে।

ইসরাইলের সঙ্গে লেবাননের সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনা চলছে। ঘটনার পরপরই ইসরাইলী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিস্ফোরণের সঙ্গে তাদের কোন যোগসূত্র নেই।

এমন এক স্পর্শকাতর সময়ে লেবাননে বিস্ফোরণ হলো যখন দেশটি ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরির হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘ ট্রাইব্যুনালের রায়ের তিনদিন আগে সংঘটিত এই বিস্ফোরণের কারণ পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।

এদিকে, বিস্ফোরণের জন্য দায়ীদের চড়া মাশুল দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব। বিপর্যয় কাটাতে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কাছে সহযোগিতা চেয়েছে লেবানন সরকার।

বৈরুতের আবাসিক এলাকায় এই রাসায়নিকের গুদামটি ২০১৪ সালে স্থাপিত হয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.