বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক:রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহযোগিতার অংশ হিসেবে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (হিমার্স) ‘সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর’ হয়ে পড়েছে। মূলত রাশিয়ান ইলেকট্রনিক জ্যামিং সিস্টেম স্থাপনের পর হিমার্স ইউক্রেনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
ইউক্রেনের সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৪ মে) ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন মতে, হিমার্সসহ অন্যান্য অস্ত্রগুলো যখন শুরুর দিকে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় তা অত্যন্ত নির্ভুল ছিল। কিন্তু বর্তমানে রাশিয়ার এতটাই শক্তিশালী রেডিও-ইলেকট্রনিক সিস্টেম ব্যবহার করছে যা হিমার্স এবং এরকম অন্যান্য অস্ত্রের গতিপথ অত্যন্ত নির্ভুলভাবে ধরে ফেলছে।
ইউক্রেনের সামরিক সূত্রগুলো বলেছে, হিমার্স সিস্টেমের ব্যবহার যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেবে বলে মনে করা হয়েছিল। এমনকি শুরুর দিকে লক্ষবস্তু ধ্বংস করার সক্ষমতার জন্য হিমার্সের ব্যাপক প্রশংসা করা হয়েছিল। তবে এটি রুশ প্রযুক্তির কাছে এটি এখন সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তা বলেছেন, রাশিয়ানরা ইলেকট্রনিক যুদ্ধ মোতায়েন করে স্যাটেলাইট সিগন্যাল অক্ষম করে, ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে হিমার্স পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে পড়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে উপযোগী না থাকায় পশ্চিমাদের দেয়া অনেক অস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। তার মধ্যে রয়েছে এক্সক্যালিবার জিপিএস-নির্দেশিত আর্টিলারি শেল, যেগুলো আর লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভরযোগ্যভাবে গুলি চালাতে সক্ষম নয়।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা পেন্টাগনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। প্রযুক্তিগত সমস্যার ক্ষেত্রে আমরা দ্রুত আমাদের মিত্রদের জানাই।
তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তিসহ যেকোনো ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশ প্রতিনিয়ত আমাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে সরঞ্জাম উন্নত করার জন্য আমরা নিয়মিত দেশগুলোর পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ পাই।
হিমার্স রকেট সিস্টেম কী
গাড়িতে স্থাপন করা উচ্চপ্রযুক্তির হালকা রকেট লঞ্চার হলো হিমার্স। ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে দ্রুততম সময়ে ও এক স্থান থেকে অন্য স্থানে এটি সহজে মোতায়েন করা যায়। প্রতিটি ইউনিটে ছয়টি করে জিপিএস গাইডেড রকেট থাকে। প্রায় এক মিনিটের মধ্যে অল্প কয়েকজন মিলেই পুনরায় রকেট লোড করে ফেলতে পারে।
এদিকে কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনে হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। চলতি মাসের শুরু থেকে খারকিভসহ ইউক্রেনের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত এলাকায় হামলা জোরদার করেছে মস্কো। এরইমধ্যে কয়েকটি গ্রামও দখল করেছে তারা। রুশ সেনাদের স্থল অভিযানের মুখে ঘরবাড়ি ছেড়েছেন প্রায় ১১ হাজার মানুষ।
পাল্টা হামলা চালিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে ইউক্রেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, রুশ বাহিনীর যেকোনো অগ্রযাত্রা রুখে দেয়া হবে। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.