রাষ্ট্রপতি কুশল বিনিময়ের সময় হাস্যরস : ভাতিজা লিটনের কাছে আম খেতে চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক:  ‘কয়েকদিন পরেই তো আমের সময় আইসা পরতেছে। এখানে আমার বাবাজি, আমাদের মেয়র সাব, আমার ভাতিজা লিটন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও উপস্থিত আছে। আমের সিজনে যেন ভালো আম পাঠানো হয়। আম না পাঠাইলে কিন্তু খবর আছে। তবে আম পাঠাইলে ফরমালিন বিষ-টিস থাকে না যেন। শুধু আমারে না মানুষরেও ফরমালিন খাওয়ানো ঠিক না।’

গতকাল শনিবার রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) একাদশ সমাবর্তনে প্রধান অতিথির লিখিত বক্তব্যের শেষে হাস্যরসাত্মক বক্তব্যে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের নিকট আম খেতে চেয়েছেন বিশ^বিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

আচার্য আব্দুল হামিদ বলেন- ইতোমধ্যে সব বক্তাই অনেক বাড়া বাড়া কথা বলেছেন। আমিও যদি বাড়িয়ে বলি তাহলে আপনারা বাড়াক্রান্ত হয়ে যাবেন। তবুও দুই-চাইডা কথা না বললে তো আমার হচ্ছে না।

রাজশাহী আসলে আমার অনেক কথা মনে পড়ে। শুনলাম এখানকার কমিশনার ৫ মাস রাজশাহীতে ছিলেন, আমিই তো এখানে ছিলাম ৭ মাস নয় দিন। এটা হইলো ১৯৭৬ সালের শেষের দিকে। আমি যখন রাজশাহী তে আসি তখন মাইমানসিংয়ের কারাগার থেকে বদলি কইরা পাঠায় দিলো কুষ্টিয়াতে।

কুষ্টিয়া আসার পথে একটা ঘটনা বলতেছি আরকি। আমাকে যখন নিয়ে আসা হচ্ছে আমার সাথে তখন যারা পুলিশ ছিলো তারা বলল- আপনি তো আর পালায় যাইতেছেন না, তাই আপনাকে আর কোমরে রশি বাইন্দা হাতে হ্যান্ডকাপ লাগাতে চাচ্ছি না। আমি তখন পুরাপুরি উকিল না হইলেও আন্ডার কন্সট্রাকশন উকিল।

তখন আমি আবার চিন্তা করলাম এটা তো একটা ব্যাপার হইতে পারে, পত্র-পত্রিকায় দেখছি আসামি নিয়ে পুলিশ যাচ্ছে হঠাৎ আসামী পুলিশকে ফালাইয়া পালাই যাইতেছিলো। পুলিশ তখন পেছন থাইকা গুলি কইরা দিলো। তো আমাকে ও ধরনের মারার কোনো ষড়যন্ত্র থাকে তাহলে দেখা গেলো হ্যান্ডকাপ ছেড়ে আমি পালাই যাচ্ছি আমাকে গুলি করে দিলো।

আমি বললাম বাবারে আমার দরকার নাই, আমাকে বান্দো। হ্যান্ডকাপ লাগায় আমাকে বাইন্দা ধরে রাখো। আমার কোনো দরকার নাই। পরে আমারে ধইরা রাখছে। যখন ফেরিতে করে পার হচ্ছি পুলিশও আমাকে ধইরা রাখছে। পরে আমাকে দেখে ৬-৭ বছরের একটা মেয়ে তার মায়ের কানে কানে আস্তে আস্তে বলল ‘আম্মু চুর’।

আমাকে তার মা দেখল যে আমি প্যান্ট-শার্ট পরা ভদ্র-সন্দ্র তাই তার মা তাকে বলল চুপ চুপ শুনে ফেলবে। কিন্তু আমি সেটা শুনে ফেলেছি। আমি তাকে বললাম অসুবিধে নেই তাকে বলতে দেন। পুলিশ তো চোর ছাড়া এভাবে কাউরে বাইন্দা নেয় না। আমাকে তো চোর ভাবা স্বাভাবিক। এরপর কুষ্টিয়া গেলাম।

সেখানে চার মাস জেলে ছিলাম। পরে রাজশাহী তে আসলাম। যখন জেলহত্যা শুরু হলো তখন রাজশাহীর জেলে ছিলো এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের বাবা আমার প্রিয় এএইচএম কামারুজ্জামান হেনা। তার ডাক নাম ছিল হেনা। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় আমরা একসাথে ঘুমিয়েছি। সিঙ্গেল খাটে ৫-৭ দিন ঘুমিয়েছিলাম।

হেনা ভাই তো অনেক মোটা-সোটা ছিলো। আমি অনেক চিকন ছিলাম। জায়গা হতো না। খাটে শুয়ে উনি একটা গইর দিয়ে খাট থেকে ফালায় দিছে। ঘুমানোর বেশি সময় পাইনি। উনি শোয়ার সাথে সাথে নাকের যে ডাক যেন টিকবার কোনো জু নাই। সেই সময়কার অনেক মজার স্মৃতি রয়েছে যা এখনো মনে পরে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.