রাবি আবেদন যোগ্যতা : শিক্ষক হতে পারলেও, শিক্ষার্থী নয়!


রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক সম্মান পরীক্ষার নীতিমালা ও আবেদনের সময়সীমা নির্ধারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় প্রতি ইউনিটে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসতে পারবে। ফলে জিপিএ ৫ পেয়েও পরীক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ পরীক্ষায় বসারই সুযোগ পাবে না।
যদিও আবেদনের নূন্যতম যোগ্যতা হিসেবে বলা হয়েছে, ‘এ’ ইউনিটে আবেদন করতে মানবিক বিভাগ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীদের এসএসসি এবং এইচএসসির যেকোন একটিতে ন্যুনতম জিপিএ-৩ এবং দু’টি মিলিয়ে ন্যূনতম জিপিএ ৭ থাকতে হবে। ‘বি’ ইউনিটে এসএসসি এবং এইচএসসির যেকোন একটিতে ন্যুনতম জিপিএ-৩.৫০ এবং দু’টি মিলিয়ে ন্যূনতম জিপিএ ৭ দশমিক ৫০ থাকতে হবে। ‘সি’ ইউনিটে জন্য এসএসসি এবং এইচএসসির যেকোন একটিতে ন্যুনতম জিপিএ-৩.৫০ থাকতে হবে এবং দু’টি মিলিয়ে ন্যূনতম জিপিএ ৮ থাকতে হবে।
কিন্তু এবারের এইচএসসি ফলাফল ঘেটে দেখা যায়, নয়টি সাধারন শিক্ষা বোর্ডে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬১৪ জন; যা মোট পরীক্ষার্থীর ১৩ শতাংশের বেশি। এদের মধ্যে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন মোট জিপিএ-৫ পাওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজার ৬২০ জনই বিজ্ঞান ও গার্হস্থ্য বিভাগের (গ্রুপ) পরীক্ষার্থী। বাকিদের মধ্যে ১৯ হাজার ৬৬৪ জন মানবিক বিভাগের এবং ১০ হাজার ৩৩০ জন ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী।
ফলে দেখা যাচ্ছে, বিজ্ঞান বিভাগের প্রায় ৭৮ শিক্ষার্থী এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়া সত্ত্বেও অংশ নিতে পারবে না।
অথচ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালায় শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতম কমানো হয়েছে। যেখানে আগের নীতিমালায় আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা ছিল সনাতন পদ্ধতিতে এসএসসি থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত চারটি স্তরেই প্রথম শ্রেণি বা গ্রেড পদ্ধতিতে এসএসসি ও এইচএসসিতে ন্যূনতম জিপিএ ৪.৫০, স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তরে ন্যূনতম সিজিপিএ ৩.৫০ এবং স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তরে সংশ্লিষ্ট বিভাগের মেধাক্রম প্রথম থেকে সপ্তমের মধ্যে থাকতে হবে। কিন্তু সেই যোগ্যতা কমিয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে সিজিপিএ মোটাদাগে ৩.২৫–এ নামিয়ে আনা হয় এবং মেধাক্রমে থাকার শর্তও তুলে দেওয়া হয়। এসএসসি ও এইচএসসির নূন্যতম জিপিএ ৪.২৫ করা হয়।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকিব বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আসলে এটি একটি বিশেষ পরিস্থিতি। পরিস্থিতি বিবেচনায় একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদিও এত বড় সংখ্যায় জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসতে না পারলে আমরা একটা সংকটের মধ্যেই পড়বো। সেই সংকট কাটানোর জন্য হয়তো আরেকটু ভালো পরিকল্পনা করার যেতো। তিন শিফটে যদি পরীক্ষা নেয়া যায়, বিশেষ পরিস্থিতিতে সেটি ৪, ৫, ৬ শিফটেও করা যেতো। সেক্ষেত্রে হয়তো আরো বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পেতো।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, যে শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পাওয়ার পরও ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না, সেটা তার দোষের কিছু নয়। ওটা আমাদের সীমাবদ্ধতা। যদি প্রকৃত অর্থেই কেউ মেধাবী হয়, তবে সে যে কোন এক সময় তার মেধার যোগ্যতা দিবেই। সে যেখানে পড়াশোনা করুক না কেন, একদিন না একদিন তার মেধার পরিচয় সে দিবেই। সুতরাং আমরা যাদের পরীক্ষাযর সুযোগ দিতে পারছি না, তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। তবুও গত বছর আমরা প্রতি ইউনিটে ৩২ হাজার করে শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু এবার তা বাড়িয়ে এটা ৪৫ হাজার করা হয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রাবি প্রতিনিধি মো: মুজাহিদ হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.