রাবিতে যৌন হয়রানি: তদন্ত কমিটির নেই কোন অগ্রগতি!

প্রতীকী ছবি

রাবি প্রতিনিধি:  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে জুন মাসের শেষের দিকে যৌন হয়রানি ও মানসিক ভাবে উত্যক্ত করার লিখিত অভিযোগ করেন আইইআরের ২য় ও ৪র্থ বর্ষের দুই শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে অভিযুক্ত শিক্ষককে সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেয়া হলেও পরিচালককে প্রধান করে গঠন করা তিন সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটির কোন ফলাফল দৃশ্যত নয় বলে হতাশ এবং ক্ষুদ্ধ ইনস্টিটিউট এবং বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ জুন শুক্রবার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে অভিযোগকারী ছাত্রীদের চাপ দেয়া হচ্ছে এই মর্মে নিরাপত্তা চেয়ে মতিহার থানায় দুটি জিডি করা হয়। এছাড়া যৌন নির্যাতন ও মানসিক ভাবে উত্যক্ত করা ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবিতে গত রবিবার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষকের সবোর্চ্চ শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন করেন আইইআরসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে অনেক আগে। কিন্তু আমরা এখনও এটার অগ্রগতি দেখতে পাই নি। এমন একটা বিষয় নিয়ে যদি কালক্ষেপণ করা হয় তাহলে তো অপরাধীরা দোষ করেও পার পেয়ে যাবে।’ এছাড়া তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি দীর্ঘদিন অচল। প্রশাসন শুধু মুখে বলে আমরা নারী বান্ধব বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কাজে আমাদের কাছে দৃৃশ্যমান না। আমি উপর মহলের কাছে দাবি জানায় আমাদের বিশ^বিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি সচল করে নারিদেরকে যৌন হয়রানি থেকে রক্ষা করতে অভিযুক্তদের অতিদ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’

যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি ও তদন্ত কমিটির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘আমাদের কমিটি ছিল এবং সেই কমিটির কার্যক্রম অনেক দৃশ্যমান ছিল। আমাদের কিছুদিন যাবৎ কমিটি নেই । কিন্তু খুব শিঘ্রীই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে একটি কমিটি দেয়া হবে।’ আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আইইআরের অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটির কাজ শুরু হয়েছে। খুব শিঘ্রীই আমরা তদন্ত কমিটির উপর ভিত্তি করে একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারব।’

কিন্তু, তদন্তের নামে কালক্ষেপণ এবং সুষ্ঠু বিচার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী।

তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে, কমিটির সদস্য অধ্যাপক রুবায়েত জাহান বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটি নিয়ে কোন কালক্ষেপণ করা হচ্ছে না। আমরা ইতিমধ্যেই বসতে শুরু করেছি। আশা করি সামনে সপ্তাহের ভিতর একটা ফলাফলে আসতে পারব।’
তবে বরাবরের মত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে, বিষ্ণকুমার অধিকারী বলেন, ‘এসব অভিযোগ সম্পন্ন বানোয়াট, মিথ্যাচার এবং কোন একটি মহল আমাকে সবার কাছে হেয় প্রতিপ্রন্ন করার জন্য এই ফাঁদ পেতেছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ^বিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষক বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘নারীরা বিশ^বিদালয়ে নানামুখী হয়রানির শিকার হয়, লাঞ্ছিত হয় কিন্তু জড়িতদের শাস্তির কোনো নজির নেই। ঘটনার আড়ালে ঘটনা চাপা পড়ে যায়। এসব ঘটনায় মামলা হয় তবে বিচার হয় না। শাস্তির কোনো নজির না থাকায় পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধী শিক্ষকরাও। এ কারণে দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে যৌন হয়রানিসহ নারী নির্যাতনের নানা ঘটনা।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রাবি প্রতিনিধি মো: মুজাহিদ হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.