রাজশাহী নগরীতে শেষ সময়ে জমেছে ইদের বাজার, দম ফেলার সময় নেই ব্যবসায়ীদের!

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ইদুল ফিতর এর বাকি আর মাত্র এক/দুই দিন। চাঁদ দেখার পরেই নির্ধারিত হবে ঈদের  দিন। তবে ইদের আগে প্রিয়জনদের নতুন পোশাক কিনতে বাজারমুখি মানুষ। সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত সরগরম থাকছে রাজশাহী নগরীর মার্কেটগুলো। দিনের বেলা প্রচন্ড গরমে ইদবাজারে মানুষের সমাগম কিছুটা কম থাকছে। তবে বিকেল গড়াতেই নামছে ভিড়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে গত দুই বছর ব্যবসা হয়নি। করোনা পরবর্তী মুসলমানদের বড় ধর্মীয় ঈদুল ফিতরের আগে কেনাকাটা অনেক ভালো হচ্ছে। প্রচন্ড গরমে দিনের বেলা বেচাবিক্রি কম হচ্ছে। কিন্তু ইফতারির পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলছে। আর অন্য বছরের তুলনায় নতুন ডিজাইনের অনেক পোশাক এসেছে। কাপড়ের মানও ভালো। তবে দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়।
বরাবরের মতো এবারের ঈদবাজারে তরুণীসহ নারীদের প্রধান আকর্ষণ নতুন কালেকশন। এবারও নতুন বেশ কলেকশন বাজারে এসেছে।
ব্যবসায়ীরা আরও বলছেন, ইদের আর তেমন সময় নাই। সময় যত ঘনিয়ে আসছে, বিক্রিও ততই বাড়ছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, চাহিদার সুযোগ নিয়ে বিক্রেতারা দাম বেশি আদায় করছেন।
সাহেববাজারে কেনাকাটা করতে আসা জান্নাতুন ফেরদৌস জানান, পরিবারের সবাইকে নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন। গত দুই বছরের তুলনায় এ বছর মার্কেটে ভিড় প্রচুর। তবে কাপড়ের দামও অনেক বেশি বলেই মনে হচ্ছে।
শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) নগরীর কোর্টবাজার, সাহেববাজার আরডিএ মার্কেট, নিউমার্কেট ও হকার্সমার্কেট, গণকপাড়া, জলিল সুপার মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি শপিং ও শো-রুম ঘুরে দেখা যায়, এসব মার্কেটের প্রতিটি দোকানেই ক্রেতাদের প্রচুর ভিড়। পছন্দের পোশাক কিনতে এ দোকান থেকে ওই দোকান ছুটে বেড়াচ্ছে ক্রেতারা। এয়ার কুলার সুবিধা রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় অন্যদের তুলনায় বেশি দেখা যায়।
নগরীর অন্য বাজারগুলোর তুলনায় সাহেববাজারের আরডিএ মার্কেটে ভিড় বেশি ছিলো। এই বাজারে ছেলে-মেয়েদের যাবতীয় পোশাক, প্রসাধনীসহ ক্রোকারিজ সবকিছুই এক ছাদের নিচে পাওয়া যাওয়ায় ক্রেতা-সমাগম বেশি থাকছে। ছেলেদের নিত্যনতুন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, জিন্স, টি-শার্ট এবং থান কাপড়ের দোকান থাকায় এই মার্কেটে ছেলেদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। ভিড় রয়েছে গণকপাড়া ও জলিল সুপার মার্কেটেও।
এদিকে, জমে উঠেছে সিল্ক শো-রুমে ঈদের কেনাকাটাও। নগরীর বিসিক এলাকার সিল্ক শো-রুমগুলো ঘুরে দেখা যায়, আসন্ন ইদকে সামনে রেখে বিচিত্র ডিজাইনের সিল্কের পোশাক শো-রুমগুলোতে স্থান পেয়েছে। শেষ সময়ে জমজমাট ব্যবসা।
‘সপুরা সিল্ক মিলস লিমিটেড’ এর শো-রুম ম্যানেজার সাইদুর রহমান জানান, ইদের আর মাত্র দুয়েক দিন বাকি। শেষ সময়ে শো-রুমে ইদের কেনাকাটা জমে উঠেছে। জিরানোর সময় নাই।
এ বিষয়ে রাজশাহী আরডিএ মার্কেট ব্যবসায় সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জানান, এখন পর্যন্ত সুন্দর পরিবেশে বেচাকেনা চলছে। শেষ সময়ে ব্যবসায়ীদের দম ফেলার সময় নাই। সব দোকানেই প্রচুর কাস্টমার আসছে। আর রাজশাহী নগরীতে ইদ কেন্দ্রীক যে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার বেচাবিক্রির প্রত্যাশা ছিলো তা অনেকাংশেই পূরণ হয়েছে। আর এই দুই/এক দিনে বেচাবিক্রি তো হবেই।
তিনি আরও জানান, ইদ বাজারে ব্যবসায়ীরা তেমন কোন প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়ে নি। তবে সোয়াবিন তেল নিয়ে ব্যবসায়ীরা কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায় আছে। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু সরবরাহ ও যোগানে সমস্যা এটা অনেক দিন থেকেই চলে আসছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো: মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.