রাজশাহী অঞ্চলে ধান কাটা-মাড়াই শুরু, স্বপ্ন বুনছে কৃষক

ছবি : সৈয়দ নাবিল

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যেই মাঠে মাঠে পুরোদমে চলবে বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ। দাম ভাল থাকায় কৃষকরা স্বপ্ন দেখছে লাভের। চৈত্রের শেষের দিকে মাঝে মাঝে বৃষ্টিতে উৎপাদন খরচ অনেকটা কমে এসেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশানুরুপ ফলন হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

অনুকুল আবহাওয়া ও ধানের দাম ভাল থাকায় চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। গত মৌসুমের চেয়ে প্রায় তিন হাজার হেক্টর বেশী জমিতে আবাদ হয়েছে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৬ হাজার ২১২ হেক্টর। এখন পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৬৯ হাজার ৩শ’ হেক্টর।

চাষিরা এখনো জমিতে বোরো চারা রোপন করে চলেছেন। গত বছর বোরোর আবাদ হয়েছিল ৬৭ হাজার হেক্টর। এ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ৮৮ হেক্টর (প্রায় ২৩ হাজার বিঘা) বেশী জমিতে আবাদ হয়েছে। বিশেষ করে জেলার বরেন্দ্র অঞ্চল বলে খ্যাত গোদাগাড়ি ও তানোর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বোরো ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে।

পাকা ধানের সোনালী দানাই কৃষকের স্বপ্নপূরণে উকি দিচ্ছে। মাঠে মাঠে ধানের মহুমুহু গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে। মাঠের পাকা ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত বাড়ছে কৃষকের। আর ধান মাড়াই বাছাই ও সংরক্ষণে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে কৃষাণীরা। বাড়ি বাড়ি কৃষাণীরা ধান মাড়াই-বাছাইয়ের জন্য উঠান পরিস্কারসহ ধোয়া-মোছায় ব্যস্ত আছেন। মাঠে কৃষক আর উঠানে কৃষাণী বোরো ধান ঘরে তোলার সম্পূরকে এগিয়ে চলেছে।

জেলার বেশীরভাগ মাঠের ধান পাকতে শুরু করেছে। আগামী ১৫দিনের মধ্যেই পুরোপুরি ধান কাটা মাড়াইয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে চাষিরা। তবে এবারে ধানের দাম ভাল থাকায় মৌসুমের শেষ পর্যন্ত ধান রোপন করেছে চাষিরা। তাই এখনো ক্ষেতে শীষই বের হয়নি। মৌসুমের আগে ও পরেও বোরো চারা রোপন হয়েছে। এবারে এমন হবে এক ক্ষেতের ধান কাটছে, পাশের ক্ষেতে ধান পাকছে এবং আরেক ক্ষেতে ধানের শীষ বেরুচ্ছে।

তানোর উপজেলার বেলখড়িয়া গ্রামের মাইনুল ইসলাম টুলু বলেন আবাদ ভাল হয়েছে। ক্ষেতে ৮০ ভাগ ক্ষেতের ধান পেকেছে। এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন ধানের শীষ দেখে মনে হচ্ছে ফলনও ভাল হবে। তবে দুশ্চিন্তায় ভূগছে শ্রমিক নিয়ে। তারা সিন্ডিকেট করে মুজুরী বাড়িয়ে দিয়েছে।

পবা কৃষি কর্মকর্তা একেএম মনজুরে মাওলা বলেন প্রায় ক্ষেতের ধানই পাকতে শুরু করেছে। ভাল ভাবে ধান ঘরে তুলতে পারলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ফলনও ভাল হবে এবং চাষিরা লাভবান হবেন। রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালী বলেন, ধানের দাম ভালো থাকায় এবার বেশি জমিতে বোরো আবাদ করেছে চাষিরা।

এখন পর্যন্ত আবাদ ভালো আছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরোর উৎপাদনও ভালো হবে বলে আশা করছেন তারা।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৬ হাজার ২১২ হেক্টরে। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৬৯ হাজার ৩শ’ হেক্টরে। এখনো রোপন চলছে। গত বছর বোরোর আবাদ হয়েছিল ৬৭ হাজার হেক্টরে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.