রাজশাহীর সীমান্তে চোরাচালান ধরা পড়ে মামলাও হয়, আসামী মেলে না কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীকে ঘিরে রেখেছে পদ্মা নদী।পদ্মা নদীর ওপারে আছে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। তারপর আবার পদ্মার পানি, যেখানে ভারতীয় সীমানা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা।সীমান্তে উজ্জ্বল লাইট রাজশাহীর শহর রক্ষা বাঁধে দাড়ালে সন্ধ্যার পর দৃশ্যমান।
রাজশাহীর সীমান্ত দিয়ে স্বর্ণ, ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ পণ্য চোরাচালানের ঘটনা ঘটছে। টহল এবং অভিযানের মাধ্যমে প্রায় সময় এসব পণ্য জব্দ করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। এর বিরুদ্ধে মামলাও হয়। কিন্তু বেশির ভাগ সময় ধরা পড়ে না চোরাকারবারীরা।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চরাঞ্চলের বাসিন্দা জানান বিজিবি সবই জানে। কোথা দিয়ে কি হচ্ছে। আসামীকে পালানোর সুযোগ দিলে আসামী তো পালাবেই। যার জন্যে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ফেনসিডিল সহ বিভিন্ন মাদক উদ্ধার হলেও গ্রেফতার নেই।
বাংলাদেশের যে কয়টি সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানের ঘটনা ঘটে তার মধ্যে একটি রাজশাহীর চর খানপুর। চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে (জানুয়ারী-নভেম্বর) ভারত থেকে এই অঞ্চল দিয়ে পাচার হওয়ার সময় ৬ লাখ ২৯ হাজার ৬৯০ টাকা মূল্যের অবৈধ পণ্য ধরেছে বিজিবি। এসব ঘটনায় করা হয়েছে ১৪টি মামলা। তবে একটিতেও আসামী পাওয়া যায়নি।
বিজিবর তথ্য অনুযায়ী, শুধু এপ্রিল মাসে সীমান্তে কোনো অবৈধ পণ্য জব্দের ঘটনা ঘটেনি। তবে মে মাসে সব থেকে বেশি চোরাচালানের পণ্য আটক করে খানপুর বিজিবি। মাসটিতে ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকার সমপরিমাণ অবৈধ পণ্য জব্দ করা হয়। এর পরের মাস থেকে অবৈধ পণ্য ধরা পড়ার পরিমাণ কমে আসে। সর্বশেষ নভেম্বর মাসে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪১০ টাকার পণ্য আটক করে বিজিবি।
এসব চোরাচালানের অবৈধ পণ্য জব্দের ঘটনায় জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারী, মার্চ, মে, জুন, জুলাই, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে একটি করে মামলা হয়েছে। তবে আগস্টে মামলা হয়েছে দুটি এবং নভেম্বরে হয়েছে চারটি। প্রতিটি মামলাই হয়েছে আসামি ছাড়া।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খানপুর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েক সুবেদার মানিক দেবনাথ গণমাধ্যমকে  বলেন, আমরা মাদকসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ পণ্য আটক করেছি। এর মধ্যে বেশিরভাগ ফেনসিডিল। সীমান্ত ঘেঁষা নদী পথ হওয়ায় আসামি ধরা সম্ভব হয় না। কারণ, চোরাকারবারিরা মালামাল ফেলে নদীতে নেমে ভারতের সীমায় ঢুকে পড়ে।
সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানের বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামগণমাধ্যমকে আরও বলেন, মাদক চোরাকারবারিরা নিত্য নতুন পন্থা উদ্ভাবন করছে। বার্মিজ স্যান্ডেলে করে ইয়াবা নিয়ে আসছে, আমরা ওটাও ধরছি। আমাদের প্রশিক্ষিত কুকুর ব্যবহার করছি এটা ধরার জন্য। আমরা কিছুদিন আগে খবর পেলাম গরুর পেটে করে মাদক পাচার হচ্ছে। কিন্তু সব গরুর পেট কেটে তো মাদক পরীক্ষা সম্ভব না। এরপরও আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.