রাজশাহীর পাম্পগুলোতে নির্ধারিত দামে পাওয়া যাচ্ছে না তেল

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকার জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা তিন দিন পার হয়ে গেলেও পাম্পগুলোতে এখনও কমেনি তেলের দাম। রাজশাহীর পাম্পগুলোতে কোথাও সরকারের বেঁধে দেওয়া নতুন দামে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। গত ৭ মার্চ দিবাগত রাত ১২টা থেকে দাম কার্যকর হয়েছিল। একারণে বাসের ভাড়াও কমছে না বলে জানিয়েছে মালিকরা।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ডিজেল ও কেরোসিন ১০৯ টাকা থেকে ৭৫ পয়সা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১০৮.২৫ পয়সা। পেট্রোল ১২৫ টাকা থেকে ৩ টাকা কমিয়ে ১২২ টাকা এবং অকটেন ১৩০ টাকা থেকে ৪ টাকা কমিয়ে ১২৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু রাজশাহীর পাম্পগুলোতে ডিজেল বিক্রি হচ্ছে ১০৯ টাকা ৩০ পয়সা, পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে ১২৩ টাকা ৩০ পয়সা ও অকটেন বিক্রি হচ্ছে ১২৭ টাকা ৩০ পয়সা।
রাজশাহী নগরীর একটি ফিলিং স্টেশনে কথা হয় বাসচালক আহমেদ আলীর সাথে। তিনি বলেন, ডিজেলের দাম যে পরিমাণে কমেছে তাতে ভাড়া কমবে না। তেলের দাম যদি আরও কমতো তাহলে বাসের ভাড়া কমতো। এর আগে ডিজেলের দাম কমানো হলে বাসের ভাড়া কমানো হয়েছিল। এবার একই থাকছে।
মোটরসাইকেল চালক জুবায়ের হাসান বলেন, তেলের দাম কমাতে খুশি হয়েছি। কিন্তু সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সে দামে রাজশাহীতে তেল মিলছে না। বরং আরও ১ টাকা ৩০ পয়সা বেশি নিচ্ছে। বাধ্য হয়ে এ দামে তেল নিতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক বলেন, দাম নির্ধারণ হওয়ার আগে শুনেছিলাম পেট্রোল ও অকটেন ১৫ টাকা কমবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার দাম কমে চার টাকা। আমরা এর আগে অকটেন বিক্রি করি ১৩০ টাকা ৯৯ পয়সা, পেট্রোল ১২৫ টাকা ৯৯ পয়সা ও ডিসেল ১০৯ টাকা ৯৯ পয়সা। তবে এই দাম থেকে কিছুটা কমেছে।
তার ধারণা, যে পরিমাণে তেলের দাম কমেছে এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমবে না। এতে বাস মালিকদের কিছুটা লাভ হবে। এছাড়া কিছু না। তবে লিটারে যদি দশ থেকে পনেরো টাকা কমতো তাহলে কিছুটা প্রভাব বাজারে পরতো।
সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হয়। ওইদিন প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা থেকে কমিয়ে ১০৯ টাকা, পেট্রোল ১৩০ থেকে কমিয়ে ১২৫ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
আর নজিরবিহীন দাম বাড়ানো হয় ২০২২ সালের ৫ আগস্ট রাতে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) জারি করা আদেশে ডিজেল ও কেরোসিন লিটার প্রতি ৩৪ টাকা এবং পেট্রল ও অকটেনে ৪৬ টাকা দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১১৪ টাকা লিটার, পেট্রোল ১৩০ টাকা এবং অকটেন ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
ওই দাম বৃদ্ধির পর গণ-পরিবহনের ভাড়া বেড়েছিলো সর্বোচ্চ ২২ শতাংশ। তার-পূর্বে ২০২১ সালের নভেম্বর প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকায় করা হয়। ওই সময়েও পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ।
তবে বাস ভাড়া কমছে না এই দামে। দুরপাল্লা পরিবহনের এক ব্যবস্থাপক বলেন, ঢাকা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাওয়া আসা করতে একটি গাড়ির তেল লাগে প্রায় ২০০ লিটার। সরকার ডিজেলের দাম কমিয়েছে ৭৫ পয়সা। একটি গাড়ির তেলের খরচ কমেছে ১৫০ টাকা। এতে বাস ভাড়া কমানো সম্ভব না। লিটার প্রতি যদি দুই থেকে ৫ টাকা কমতো তাহলে বাসের ভাড়াও কমানো যেত।
রাজশাহী পেট্রোল পাম্প ওর্নাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মমিনুল হক বলেন, রাজশাহী জেলাজুড়ে একটি নির্ধারিত দাম করে দেওয়া আছে। এর বাইরে কোনো পাম্প বেশি টাকা নিতে পারবে না। সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে তার থেকে বহন খরচও যোগ করতে হয়। আমাদের তেল নিয়ে আসতে হয় পাবনার বাঘাবাড়ি থেকে। একারণে প্রতিটি তেলের দাম সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.