রাজশাহীর চারঘাটে রঙ্গিন মাছ চাষে সফল উদ্যোক্তা ২ ভাই

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাণিজ্যিকভাবে রঙ্গিন মাছ চাষে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সফল উদ্যোক্তা দুই ভাই গড়ে তুলেছেন আর এস কালার ফিস ফার্ম। নিজস্ব খামারে করছেন প্রায় লক্ষাধিক রঙ্গিন মাছের বানিজ্যিক চাষ, বিক্রয় করছেন দেশের রাজধানী শহর ঢাকাসহ বড় বড় জেলা শহর ও উপজেলায়।

উপজেলার চারঘাট ইউনিয়নের পরপনপুর গ্রামে রঙ্গিন মাছের মাছ চাষ করছেন দুই ভাই রহমত আলী ও খালেদ মাহমুদ সুজন। দুই ভাই মিলে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন আরএস কালার ফিস ফার্ম।
ফার্মের উৎপাদিত রঙ্গিন মাছ বিক্রি হচ্ছে সারাদেশে, স্বপ্ন দেখছেন একদিন বিদেশেও রপ্তানী করবেন। তাদের আগ্রহ দেখে উৎপাদন বৃদ্ধি ও কারিগরি সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন সিনিয়ির উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর।
সরেজমিনে আর এস কালার ফিস ফার্মে গিয়ে দেখা যায়, ছোট-বড় প্রায় ২০ জাতের প্রায় লক্ষাধিক বিদেশী রঙ্গিন মাছ রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য জাতগুলোর মধ্যে রেড ইয়ার গাপ্পি, রেড টেল প্লাটিনিয়াম গাপ্পি, এলবিনো ফুল রেড বা রেড মস্কো, বøাক মস্কো, সান্তাক্লোজ, হোয়াইট ডক্রডো, রেডিয়াম মুনতেল বেলুনমালি, লং ফিন জের্বা ইত্যাদি। এর মধ্যে রেড ইয়ার গাপ্পি, এলমিনো কৈ প্রতি পিস ১৫০০-২০০০ টাকায় বিক্রয় করেন বলে জানিয়েছেন সুজন।
বড় ভাই রহমত বিটিসি নিউজকে বলেন, শখের বেশে ২০১৭ সালে ছোট ভাই সুজনকে নিয়ে শুরু করেন রঙ্গিন মাছের চাষ। প্রথম দিকে জেলা শহর ও ঢাকা থেকে মা মাছ সংগ্রহ করে ছোট পরিসরে বাড়ির আঙ্গিনায় ৪টি স্যানেটারি রিং দিয়ে এই মাছ চাষ করতেন।
বাজারে চাহিদা থাকায় বছর ঘুরতেই সফলতার মুখ দেখেন তিনি। রঙ্গিন মাছ চাষ ব্যবসায়িকভাবে লাভজনক হওয়ায় প্রাইভেট চাকুরী ছেড়ে দিয়ে বানিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু করেন।
চাহিদা বৃদ্ধি পেলে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের আর্থিক সহায়তায় পরিসর বাড়িয়ে গড়ে তুলেন জেলার সর্ববৃহৎ রঙ্গিন মাছের উৎপাদন সেন্টার।
সরাসরি থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর থেকে মাছের পোনা সংগ্রহ করে রেণু উৎপাদনের মাধ্যমে পোনা সংগ্রহ করে মাছ উৎপাদন করছেন তারা।
সুজন বিটিসি নিউজকে বলেন, ঢাকার কাটাবন ও অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে দেশের প্রায় সকল জেলা ও উপজেলায় আরএস কালার ফিস ফার্মের রঙ্গিন মাছ বিক্রয় করা হয়। রঙ্গিন মাছ বিক্রয়ের মাধ্যমে মাসে প্রায় লক্ষাধিক টাকা আয় করেন বলে জানিয়েছেন সুজন।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর এর মাধ্যম সরকার থেকে শহজ শর্তে লোন ও কারিগরি সহায়তা পেলে দেশীয় পদ্ধতিতে কোয়ালিটি সম্পন্ন রঙ্গিন মাছ তৈরি ও উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। যার ফলে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওয়ালী উল্লাহ মোল্লাহ বিটিসি নিউজকে বলেন, রঙ্গিন মাছের বানিজ্যিক সম্ভাভনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে ও বিদেশে একশ্রেনীর মানুষের কাছে এই রঙ্গিন মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই অনেকেই মাছ চাষের দিকে ঝুঁকছেন। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর এই উদ্যোগকে উৎসাহ প্রদান করতে এনএপিপি প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরে হ্যাচারী উন্নয়নে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা সহায়তা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.