রাজশাহীতে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার উৎসব

ফাইল ছবি
বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর মাঠে শোভা পাচ্ছে সোনালী ধানের শীষ। মাঠ জুড়ে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। ইতি মধ্যেই রাজশাহী অঞ্চলে কৃষকরা বোরো ধান কাটা শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে কিছুটা বৈরী আবহাওয়া থাকলেও বেশী সময় অনুকূল আবহাওয়া থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় বোরো আবাদ ভালো হয়েছে।
আশানুরূপ ফলনের সম্ভাবনাও রয়েছে। এ সবএলাকার মাঠ গুলোতে যতদূর চোখ যায় চারদিকে শুধু সোনালী ফসলের সমারোহ। পুরো মাঠ যেন সোনালী রঙে সেজেছে।কৃষি বিভাগ বলছে, রাজশাহীর মাঠে প্রায় ৫০ শতাংশধান পেকেছে।
তবে শঙ্কা কাটেনি শ্রমিক সংকট নিয়ে। ইতিমধ্যে অন্তত এক হাজার  শ্রমিক মুভমেন্ট পাস হাউর অঞ্চলে ধান কাটতে চলে গেছেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলায়এ বছর ৬৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ৬ মেট্রিক টন। গত ১৪ এপ্রিল লু হাওয়ায় জেলার ২৮ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে। এছাড়া আর কোন বিপর্যয়ের খবর পাওয়া যায়নি।
রাজশাহীর সিংহ ভাগ জমিতে এবার ব্রি ধান-২৮ এবং‘জিরা’ নামের ধানের স্থানীয় একটি জাতের চাষ হয়েছে।এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে  ব্রি ধান-২৮।রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, পবা ও মোহনপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, মাঠে যতদূর চোখ যায় শুধু ধানক্ষেত। কোন ক্ষেতের ধান প্রায় সবই পেকে গেছে।
আবার কোন জমির ধান আধাপাকা অবস্থায় রয়েছে।এদিকে চাষিরা জানিয়েছেন, এক বিঘা হাইব্রীড জাতের বোরো ধান চাষে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ২৮ মণ ধান উৎপাদন হয়ে থাকে। ভাল আবাদ হলে কোন কোন জমিতে ৩০ থেকে ৩৫ মণপর্যন্ত ধান হয়। বাজারে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করতে পারলে লাভ হবে। দিনকে দিন খড়ের দাম ভাল থাকায় তাঁদের পুষিয়ে যায়।
রাজশাহীতে এক হাজার আঁটি খড় তিন থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি হয়েথাকে। চাষিরা জানান, ধান দেখে মনে হচ্ছে এবার খড়ও ভালহবে। তারা ইতিমধ্যে ধান কাটা শুরু করেছেন।
চাষিরা বলেন, আর এক সপ্তাহের মধ্যেই পুরোদমে ধান কাটা শুরুহবে। কৃষকরা বলেন, চলতি বছর ‘রোপা-আমন ধানও ভাল হয়েছিল। বোরো ধানও ভাল ল্যাগছে।
তবে কৃষকরা বলেন,মাঠে প্রচুর ধান আবাদ হওয়ায় একসঙ্গে কাটাকাটির সময় শ্রমিক পাওয়া যায় না। শ্রমিক সংকটে সময় মতোধান কাটা না গেলে ঝড়-বৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি হওয়ার শঙ্কাথেকে যায়।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কে জে এম আব্দুল আউয়াল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিবছরই এখানে শ্রমিকের কিছুটা সংকট দেখা দেয়। এর একটি বড় কারণ হলো-এখানকার অনেক শ্রমিক ধান কাটতে হাওরাঞ্চলে চলে যান। এবারও ইতো মধ্যে জেলার বাঘা উপজেলা থেকে অন্ততএক হাজার শ্রমিক মুভমেন্ট পাস এবং কৃষি বিভাগ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমোদন নিয়ে হাওরাঞ্চলে চলে গেছেন। ওই শ্রমিকেরা হাওরে ২০ দিন থেকেযে ধান আনেন তাতে সারা বছরের চাল হয়ে যায়। সে কারণে তাঁরা হাওরাঞ্চলে চলে যান। তবে রাজশাহীতে যেন শ্রমিকের সংকট না হয় তার জন্য কোন জমির ধান কখন কাটা উচিত সেটা দেখে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা চাষিদের জানাবেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.