রাজশাহীতে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষের আলোচনা সভায় বক্তারা, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়

এসিডি প্রতিবেদক: ‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। কিন্তু দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। চলতি বছরের শুধু অক্টোবর মাসেই সারাদেশে ১৮৩ টি ধর্ষণ এবং ৪৬৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তাই এভাবে নারী ও শিশু নির্যাতন অব্যাহত থাকলে এটি দেশে উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে।’

আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজশাহীর উন্নয়ন সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’র সম্মেলন কক্ষে ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-২০১৯ (২৫ নভেম্বর-১০ ডিসেম্বর)’ পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

‘নারী-পুরুষের সমতা, রুখতে পারে সহিংসতা’ এই স্লোগানে বেসরকারি সংস্থা ‘ব্র্যাক’ এর সহযোগিতায় ও মানবাধিকার সংস্থা ‘এসিডি’র আয়োজনে আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন বিলোপ (প্রতিরোধ) উদযাপন করে।

‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-২০১৯ উপলক্ষ্যে সোমবার সকাল ১০টায় সর্বস্তরের নারী-পুরুষ ও কিশোরদের অংশগ্রহণে এসিডি এর প্রধান কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি নগরীর আলুপট্টি মোড় হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় পূর্বের স্থানে গিয়ে শেষ হয়।

পরে এসিডির সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর (ওয়ার্ড নং-২২, ২৩, ২৪) নাদিরা বেগম, এসিডির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. শাহীনুর রহমান এবং ব্র্যাকের টেকনিক্যাল ম্যানেজার মো. মেহেদী হাসান। সংস্থার প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মো. মেরাজ উদ্দিন তালুকদারের উপস্থাপনায় এসময় ব্র্যাকের রাজশাহী ডিভিশনাল ম্যানেজার মো. রায়হানুল ইসলামসহ প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ ও কিশোর-কিশোরী উপস্থিত ছিলেন।

এসিডির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. শাহীনুর রহমান বলেন, ‘সমাজে দুভাবে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। একটি শারিরীক ও আরেকটি হলো মানসিক নির্যাতন। বেশিরভাগ নির্যাতনই নিকটাত্মীয়দের মাধ্যমেই ঘটে থাকে। তাই আমরা একটু সচেতন হয়ে সবাই নারী ও শিশুদের প্রতি সদয় আচরণ করলে নারী ও শিশু নির্যাতনমুক্ত একটি সুন্দর সমাজ জাতিকে উপহার দিতে পারবো।’

সভায় ব্র্যাকের টেকনিক্যাল ম্যানেজার মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘দেশে নারী-পুরুষের সমতা ফিরিয়ে আনতে হবে। শুধু পুরুষের আয়-উপার্জন দিয়ে কোনো সংসারে পুরোপুরি শান্তি আসে না। এহন্য দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হলে অবশ্যই নারীদের হাতকে কাজে লাগাতে হবে। তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে নারীরাও মানুষ। তাদেরকে সমান গুরুত্ব দিয়ে সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে। সর্বোপরি সকল প্রকার নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে সমাজের পুরুষ ও তরুণ-যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। তাইলেই বৈষম্যহীন সুন্দর সমাজ আমরা উপহার দিতে পারবো।’

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নাদিরা বেগম, ‘অধিকাংশ শিশু নির্যাতনের ঘটনা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সূত্রাপাত হয়। তাই অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে যাতে করে ১৮ বছরের নিচে সন্তানদেরদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেয়া না হয়। সন্তানদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ গড়ে তুলতে হবে। নারীদের নারী মনে না করে একজন মানুষ ভেবে সমাজের পুরুষ সমাজ যদি তাদের প্রতি সহযোগিতামূলক আচরণ করে তাহলে নারী-পুরুষ সমতার সমাজ সৃষ্টি হবে।’

বার্তা প্রেরক আমজাদ হোসেন শিমুল, মিডিয়া ম্যানেজার. এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.