রাজশাহীতে আমের মুকুলের ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে আমের মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি। মুকুলের সেই সুমিষ্ট সুবাস মাতিয়ে তুলছে সকলের মন। শীতের জড়তা কাটিয়ে কোকিলের সেই সুমধুর কুহুতানে মাতাল করতে আবারও ফিরে এলো বাংলার বুকে ঋতুরাজ বসন্ত। ছয় ঋতুর এই বাংলাদেশে পাতাঝড়া ষড়ঋতুর রাজা বসন্ত।
আবহমান বাংলার সৌন্দযের্র রাজা বলে পরিচিত গ্রীষ্মকাল। ফাগুনের ছোঁয়ায় পলাশ-শিমুলের বনে লেগেছে আগুন রাঙা ফুলের মেলা। রাজশাহীর মহানগরী-সহ উপজেলার প্রতিটি এলাকা জুড়ে এখন সর্বত্র গাছে গাছে শুধু আমের মুকুল মৌ মৌ ঘ্রাণ। মুকুলের ভারে নুয়ে পড়ার উপক্রম যেন প্রতিটি আমগাছ। সেই সুবাদে মৌমাছিরাও আসতে শুরু করেছে মধু আহরণে। রঙিন-বন ফুলের সমারোহে প্রকৃতি যেমন সেজেছে বর্ণিল সাজে, তেমনি নতুন সাজে যেন সেজেছে আত্রাই উপজেলার আম বাগানগুলো।
আমের মুকুলে ভরপুর আর ঘ্রাণে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার সবত্র জানান দিচ্ছে বসন্তের বার্তা। শোভা ছড়াচ্ছে নিজস্ব মহিমায়। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে রুয়েট-রাবি-সহ বাগানগুলো। প্রায় ৮০ শতাংশ গাছেই এসেছে মুকুল।
বাগান মালিক, কৃষিবিদ, আমচাষিরা আশা করছেন বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া
অনুকৃলে থাকলে রাজশাহীতে আমের বাম্পার ফলন হবে। আমচাষি ও বাগান মালিকরা বাগানে পরিচর্চা নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। অবশ্য গাছে মুকুল আসার আগে থেকেই গাছের পরিচর্চা করে আসছেন তারা। যাতে করে গাছে মুকুল বা গুটি বাঁধার সময় কোন সমস্যার সৃষ্টি না হয়।
রাজশাহীর জেলা উপজেলাগুলিতে ফজলি, খিড়সা, মোহনা, রাজভোগ, রূপালী, গোপালভোগ-সহ অন্যান্য জাতের আম চাষের উপযোক্ত হওয়ায় চাষিরা নিজ উদ্যোগে প্রথমে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে চারা সংগ্রহ করে আমের বাগান তৈরি করলেও বর্তমানে তারা নিজেরাই চারা উৎপাদন করে তাদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সুফলও পেয়েছেন অনেকেই।
আম চাষে সফল কৃষক রাজশাহী নগরীর মিন্টু ও কাজিম জানান, পুরাপুরিভাবে এখনো সব গাছে মুকুল আসেনি। কয়েকদিনের মধ্যেই সকল গাছেই মুকুল আসবে। আমি গত বছর আম থেকে অনেক টাকা আয় করেছি। ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ কম থাকায় এবার কাঙ্খিত ফলনের আশা করছেন তারা।
সুবিধাভোগীদের সুফল দেখে চাষিরা আম চাষে উৎসাহিত হয়ে নিজ নিজ উদ্যোগে নতুন নতুন বাগান তৈরি করছেন। ধীরে ধীরে এ উপজেলা জুড়ে সম্পসারিত হচ্ছে নতুন নতুন আমের বাগান। উৎপাদিত আম মানসম্মত হওয়ায় চাহিদাও বাড়বে অনেক।
রাজশাহী পবা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ মুজতবা আলী বিটিসি নিউজকে জানান, বিরাজমান আবহাওয়া ও মাটি আম চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। এ বছর আবহাওয়া অনুকৃল থাকায় আমের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি পাওয়ার আশা করা যাচ্ছে। আবহওয়া অনুকুলে থাকায় এবার গাছে খুব একটা কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন নেই। তবে ছাত্রাকজনিত রোগেও আমের মুকুল- ফুল-গুটি আক্রান্ত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে আম চাষীদের আম গাছে মুকুল আসার আগে এবং আমের গুটি হবার পর নিয়মিত ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া জৈব বালাইনাশক ও ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে আম-সহ অন্যান্য ফল চাষে কৃষকদেরকে উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে। তবে আবহাওয়া অনুকৃলে থাকলে এবং বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমের ফলন ভাল হবে বলে জানান তিনি।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.