রাজধানীতে বিপুল অস্ত্র-গুলিসহ আন্তঃদেশীয় ৫ অস্ত্র চোরাকারবারিকে গ্রেফতার

ঢাকা প্রতিনিধি: রাজধানীতে বিপুল অস্ত্র ও গুলিসহ আন্তঃদেশীয় পাঁচ অস্ত্র চোরাকারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মিরপুর, দারুস সালাম ও গাবতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ব্যবসায় ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার, আটটি বিদেশি পিস্তল, ১৬টি ম্যাগাজিন ও আটটি গুলি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো: দলনেতা আকুল হোসেন, ইলিয়াস হোসেন, আব্দুল আজিম, ফারুক হোসেন এবং ফজলুর রহমান। তারা সবাই যশোর জেলার বেনাপোল এবং শার্শা থানার অধিবাসী।
এ ব্যাপারে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, সম্প্রতি গুলশানের গোয়েন্দা বিভাগ বিভিন্ন অপরাধীদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি অবৈধ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে। সেসব ঘটনায় করা মামলাগুলো তদন্তকালে জানা যায়, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবসায়ীর একটি সংঘবদ্ধ গ্রুপ দেশের সীমান্তবর্তী যশোর জেলার বেনাপোল থেকে অস্ত্র ও গুলি সংগ্রহ করে। পরে তা সারা দেশে অপরাধীদের নিকট সরবরাহ করছে।
বেনাপোল থেকে কে বা কারা অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তা জানার জন্য গোয়েন্দা দল কাজ করা শুরু করে। পরে গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, আন্তর্জাতিক অস্ত্র কেনাবেচা দলের সদস্যরা বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি নিয়ে অপরাধীদের নিকট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রাইভেটকারে করে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড হয়ে ঢাকায় ঢুকবে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) রাতে গুলশান বিভাগের একাধিক টিম দারুস সালাম থানা এলাকায় অবস্থান নেয়।
গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, রাত ৩টার দিকে একটি সিলভার রংয়ের প্রাইভেটকার গাবতলী ব্রিজের ইউলুপ দিয়ে সন্দেহজনকভাবে দ্রুত গতিতে উত্তর দিকে যেতে থাকে। পরে দিয়াবাড়ী এলাকায় অবস্থানরত টিমকে বেতার মারফত রাস্তায় ব্যারিকেড দিতে বলা হয় এবং অন্য টিমগুলো প্রাইভেটকারটির পিছু ধাওয়া করতে থাকে। ডিবির সদস্যরা স্থানীয় জনগণের সহায়তায় রাস্তায় চলাচলরত গাড়ি দিয়ে দারুস সালাম থানার বেড়িবাঁধ বড় বাজার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি করে। জ্যামে আটকাপড়া গাড়িটিকে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় ডিবি পুলিশের সদস্যরা অভিযুক্তদেরসহ আটক করে।
উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, এই অস্ত্র ব্যবসা চক্রের মূলহোতা আকুল নিজে বা তার বিশ্বস্ত লোকজনের মাধ্যমে বেনাপোল সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় অস্ত্র সরবরাহ করে। সে ২০১৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ভারতের তৈরি দুই শতাধিক অস্ত্র নিজে বিক্রি করেছে বলে তারা জানায়।
গ্রেফতারকৃতরা অস্ত্র চোরাচালানসহ চক্রের অন্য সদস্যরা তক্ষক পাচার প্রতারণা, সীমান্ত পিলার, সাপের বিষ, গোল্ড স্মাগলিং, প্রত্নতাত্ত্বিক মূর্তি, ইয়াবা ও মাদক আইসের ব্যবসা করে আসছে।
তিনি আরো জানান, সীমান্ত এলাকা হয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে ভারত থেকে প্রতিটি আগ্নেয়াস্ত্র আনা হতো ৫০ হাজার টাকায়। এরপর সেসব অস্ত্র দেশে বিক্রি করা হতো ৮০-৯০ হাজারে। গত সাত বছরে আনা অন্তত ২০০টি অস্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছিল সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজিতে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.