যুবলীগকে যে বার্তা দিলেন শেখ হাসিনা

বিশেষ প্রতিনিধি: যুবলীগ প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে যুব সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে বক্তব্য দেওয়ার সময় সরকারপ্রধান বিরোধী দলের হুমকি-ধমকি আর সরকার বিরোধীদের সমালোচনায় বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান নেতাকর্মীদের। একইসঙ্গে তিনি যুবলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে গ্রামে গিয়ে অনাবাদি জমি চাষাবাদের নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ২০৪১ সালের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলতে যুবসমাজের মাঝে চেতনা সৃষ্টি করতে হবে। সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে।
যুবলীগের প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শুক্রবার (১১ নভেম্বর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জাহাঙ্গীর কবীর নানক বক্তব্য রাখেন।
যুবলীগের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। এসএমই  ফাউন্ডেশন, প্রবাসী ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক। সব জায়গায় লোন আছে। তারা সেখান থেকে লোন নিতে পারে। নিজেরা কাজ করতে পারে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।  এদিকে ওদিকে না ঘুরে কাজ করে তারা দেশের উন্নতি করতে পারে।
যুবলীগের কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, যুবলীগ ভূমিহীন, গৃহহীন মানুষদের ঘর করে দিয়েছে। করোনাকালে তারা যথেষ্ট কাজ করেছে। রোগীর চিকিৎসা, লাশ দাফন, ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে সব কাজে তারা উদ্যোগী হয়েছে। ঝড়-বন্যায় আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো মানবতার ডাকে ছুটে গেছে। কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে। যুবলীগসহ সব সংগঠন ধান কেটে দিয়েছে। বৃক্ষরোপণের আহ্বান করেছি, যুবলীগ লাখ লাখ বৃক্ষচারা রোপণ করেছে। এভাবে মানুষের পাশে আমাদের এখনও দাঁড়াতে হবে।
যুবলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তরুণ্যের শক্তি, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। যুবকদের আজ দেশ গড়ার কাছে মনোযোগী হতে হবে। আমাদের দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করতে হবে। আমাদের পরনির্ভরশীল থাকলে হবে না। আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। এজন্য আহ্বান করেছি, এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে। যুবলীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকে যারা এখানে আছেন বা বাইরে আছেন, সবাইকে বলবো, নিজের গ্রামে যান। গ্রামের কোনও জমি যেন অনাবাদি না থাকে সেটা দেখতে হবে। যেসব জমি অনাবাদি পড়ে আছ সেগুলো যাতে চাষ হয়। গাছ লাগানো হোক। ফসল ফলানো হোক। তরিতরকারি, সবজি, যা যা দরকার চাষ করতে হবে। নিজের জমি চাষ করতে হবে। অন্যের জমিও যেন উৎপাদনশীল হয় সেই ব্যবস্থা প্রতিটি যুবলীগ কর্মীকে করতে হবে।
তিনি বলেন, সেই সঙ্গে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার জন্য সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক থেকে যুবসমাজ যেন দূরে থাকে। কোনোমতেই যেন কেউ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। তার জন্য যুবলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে অঙ্গীকার করতে হবে। সেভাবে কাজ করতে হবে। যুবসমাজের মাঝে চেতনা গড়ে তুলতে হবে। সেই চেতনায় বাংলাদেশের উন্নতি হবে। উৎপাদন বৃদ্ধি মানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবসমাজকে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব– উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ার জন্য এখন থেকেই কাজ করতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে হবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। দেশের মানুষের কল্যাণ করতে হবে।
যুবলীগকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, তরুণ সমাজের দায়িত্ব দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আদর্শ নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সেটাই হবে সবার প্রত্যয় ঘোষণা। সেটাই হবে প্রতিজ্ঞা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.