মুষ্টি চালের টাকায় তৈরি যে মসজিদ!

সৈয়দপুর প্রতনিধি : রাজধানী ঢাকার মতো নীলফামারীর সৈয়দপুরকেও মসজিদের শহর বলা হয়। কারণ সৈয়দপুরের শহর ও গ্রামঞ্চল ছোট-বড় প্রচুর মসজিদ-সম্ভারে বেশ ঋদ্ধ। ফলে সৈয়দপুর মসজিদ-স্থাপত্যে অনন্য বৈশিষ্ট্যময়। আর নান্দনিক স্থাপত্য ও নির্মাণশৈলীর জন্য সৈয়দপুরের ঐতিহাসিক চিনি মসজিদ বেশ বিখ্যাত।

 

সৈয়দপুর শহরের চিনি মসজিদটির সুন্দর ও সুখপাঠ্য ইতিহাস রয়েছে। জানা যায়, এতিহ্যবাহী ও সুরম্য এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৬৩ সালে। শহরের ইসলাবাগ এলাকায় হাজি বাকের আলী ও হাজি মুকুছন নামে দুই ব্যক্তি বাঁশ ও অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী দিয়ে প্রাথমিকভাবে একটি মসজিদ নির্মাণকাজ শুরু করেন।

 

 

পরে এলাকাবাসী মুঠো মুঠো চাল দিয়ে মসজিদটির নির্মাণকাজে সার্বিক সহায়তা করেন। জনশ্রুতি রয়েছে, মসজিদের উন্নয়নের স্বার্থে এলাকাবাসী স্বেচ্ছায় তাদের পুরো এক মাসের উপার্জন দান করে সহায়তা করেছিলেন।

পরবর্তীতে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে মসজিদের ইমাম হাজি হাফিজ করিমের উদ্যোগে মসজিদটি দোচালা টিনের করা হয়। তখন মসজিদটির প্রথম অংশ পাকা করা হয়।

১৯৬৫ খ্রিস্টব্দে মসজিদটি পুনরায় নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। ১৯৬৫ সালে বগুড়ার একটি ফ্যাক্টরি মসজিদের জন্য প্রায় ২৫ টনের মতো চীনা মাটির পাথর দান করে। এছাড়াও তখন কলকাতা থেকে ২৪৩টি মর্মর পাথর এনে লাগানো হয়। ফলে এভাবেই মসজিদটি শহরের ইসলামবাগ এলাকায় গড়ে উঠে।

 

 

মসজিদের দেয়াল দেখতে চিনির দানা দিয়ে তৈরি মনে হয়। তাই লোকমুখে এটি ‘চিনি মসজিদ’ নামে পরিচিত পেয়েছে। মসজিদের বাইরের ফলকে ফার্সিতে ‘চিনি মসজিদ, ইসলামাবাগ’ লেখা রয়েছে।

মসজিদটির  নয়নাভিরাম ৩২টি মিনার রয়েছে। এছাড়াও ৩টি বড় গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের দেয়ালে চীনা মাটির টুকরো দিয়ে ফুল-ফল ও গাছগাছালির নকশা রয়েছে। দক্ষিণের বারান্দাটি সম্পূর্ণ সাদা সিমেন্টের মোজাইককৃত।

 

 

মসজিদের প্রবেশের জন্য উত্তর দক্ষিণে দুইটি দরজা রয়েছে। দোতলায় মেহমান ও পর্যটকরা থাকার জন্য একটি কক্ষ রয়েছে। মসজিদটির অনন্য নির্মাণশৈলী  ও স্থাপত্য-সৌন্দর্য্য দেখতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সৈয়দপুরে অনেক লোকজন আসেন।

যাবেন যেভাবে
বাস, বিমান বা ট্রেনযোগে সৈয়দপুর। সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার উত্তরে ইসলামবাগে মসজিদটি অবস্থিত।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.