মালয়েশিয়ায় খুন হওয়া সিরাজগঞ্জের ছেলে হ্যাপীর লাশের অপেক্ষায় স্বজনেরা

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের ১২ নং ওয়ার্ডের পিটিআই রোডের কোল গয়লা মহল্লার মরহুম শামসুল মন্ডল ও বীরঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা মাতা ছুরাইয়া খাতুনের ছোট ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী পারভেজ মন্ডল ওরফে হ্যাপী পারভেজ (৪৪) সহকর্মীদের হাতে নির্মম ভাবে খুন হয়েছেন।

গত মঙ্গলবার (০৩ নভেম্বর) রাতে মালয়েশিয়ার যহরবারু লাবিস এলাকায় তাকে হত্যার পর ঘাতকরা লাশ রাস্তায় ফেলে দিয়ে সড়ক দূর্ঘটনা বলে প্রচার করে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।

এ ঘটনায় মালয়েশিয়া পুলিশ ৫ জন সহকর্মীকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিষয়টি বেরিয়ে আসে।

এ বিষয়ে নিহতর বড় ভাই দৌলত মন্ডল ও মেঝো ভাই জামাল উদ্দিন বাপ্পি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের সবার ছোট ভাই পারভেজ মন্ডল ওরফে হ্যাপী পারভেজ ১৩-১৪ বছর ধরে মালয়েশিয়ার যহরবারু লাবিস এলাকায় ইয়াদা কন্সট্রাকশন এন্ড হার্ডওয়ার এন্টারপ্রাইজ কোম্পানিতে নির্মাণ কর্মী হিসাবে কর্মরত ছিলেন।

কর্মরত থাকাবস্থায় তার সহকর্মীরা তার টাকা পয়সা হাতিয়ে নিতে ও কাজের বিষয়ে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে নির্মম ভাবে পিটিয়ে তাকে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ রাস্তায় ফেলে দিয়ে এটাকে সড়ক দূর্ঘটনা বলে প্রচার করে। এ হত্যার সাথে জড়িত ইন্দোনেশিয়ান ৪ জন, মায়ানমারের ১ জন রোহিঙ্গা ও নেপালের ১ জনকে মালয়েশিয়ান পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এ হত্যার সাথে বাংলাদেশী ১ জন জড়িত বলেও তারা দাবী করেছে।

এ বিষয়ে নিহতর স্ত্রী ঝিনা খাতুন (৩৮) বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, তার স্বামী পারভেজ মন্ডল ওরফে হ্যাপী পারভেজ একজন ন্যায় পরায়ন, ধার্মিক ও ৫ ওয়াক্ত নামাজি ব্যক্তি ছিলেন। কারো কোন অন্যায় দেখলে তার প্রতিবাদ করতেন। এটাই তার জন্য কাল হয়ে দাড়ালো। তার সহকর্মীদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাকে তারা নির্মম ভাবে পিটিয়ে হত্যার পর এ হত্যাকান্ড ধামাচাপা দিতে লাশ সড়কে ফেলে দিয়ে সড়ক দূর্ঘটনা বলে প্রচার করে।

অথচ তার গায়ে স্যান্ডেল গেঞ্জি ও পরনে সাধারণ লুঙ্গী ছিল। লুঙ্গী-গেঞ্জি পড়ে সে কখনোই বাইরে বের হয় না। তাই এটা কিছুতেই সড়ক দূর্ঘটনা নয়। এটা একটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। তিনি স্বামী হত্যার বিচার চান। এদিকে স্বামী হত্যার ৮ দিন অতিবাহিত হলেও দেশে লাশ ফেরত না আসায় তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

কলেজ পড়ুয়া মেয়ে নাদিয়া পারভীন (১৮) ও স্কুল পড়ুয়া ছেলে সিয়াম হোসেন (১৬) কে নিয়ে তিনি স্বামীর লাশের অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে আছেন। অপরদিকে নানা রোগে আক্রান্ত বীরঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা মাতা ছুরাইয়া খাতুন সন্তানের শোকে শয্যাশয়ী হয়ে পড়ে আছে। এ অবস্থায় তারা এ হত্যার বিচার ও দ্রুত লাশ ফেরতের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি এম মুছা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.