মান্দায় কাল্পনিক ভূয়া দলিল তৈরী : বাবার জমি জবরদখলের চেষ্টা


নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় ভূমি অফিসের তহসিলদারের যোগসাজসে কাল্পনিক ভূয়া দলিল থেকে নামজারি তৈরী করে বাবার জমি জবরদখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ছেলে রফিকুল ইসলাম শাহের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিকার চেয়ে বাবা আব্বাস আলী শাহ দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করেছেন। আব্বাস আলী শাহ মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের খুদিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত রনজিত শাহের ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, আব্বাস আলী শাহ ও তার স্ত্রী আমেনা খাতুনের দাম্পত্য জীবনে এক ছেলে রফিকুল ইসলাম শাহ এবং দুই মেয়ে ছকিনা ও হাসিনা। বাবা আব্বাস আলীকে দাতা সাজিয়ে খুদিয়াডাঙ্গা মৌজার ৯৪ শতাংশ গত ৭/৩/৭৮ সালে ৪১৮২ নম্বর এবং মা আমেনা খাতুনকে দাতা সাজিয়ে পুজাঘাটি ও খুদিয়াডাঙ্গা মৌজার ৪১ দশমিক ২৫ শতাংশ জমি গত ২১/৩/৭৮ সালে ৪২৬৩ নম্বর হেবাবিল এওয়াজ নামা দলিল করে নেয় ছেলে রফিকুল ইসলাম। পরবর্তীতে সাবরেজিস্ট্রার অফিস থেকে ৪১৮২ নম্বর ও ৪২৬৩ নম্বর দলিলের জাবেদা নকল উত্তোলন করে দেখা যায় দাতা এবং গ্রহীতা সম্পূর্ন আলাদা। যা হেবাবিল এওয়াজ নামা দলিল দু’টি কাল্পনিক ভূয়া। ছেলে রফিকুল ইসলাম উক্ত সম্পত্তিতে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে জন্য মান্দা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে চিরস্থায়ী ২২৭/১৪ মামলা করা হয়।

আরো জানা যায়, গত ২৮/০৩/১১ তারিখে ২৮২৪ নং ডিকলারেশন অফ হেবা দলিলের বর্ননা দিয়ে ১০/৯/১৩ তারিখে খুদিয়াডাঙ্গা মৌজার ১ একর ৬ দশমিক ৬ শতাংশ দলিল করে সম্পত্তি দখল নেয়ার পায়তারা করেন রফিকুল ইসলাম। পরে আব্বাস আলী প্রসাদপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে জাবেদা নকল সংগ্রহ করে দেখেন তাকে দাতা সাজিয়ে তার ছেলে রফিকুল ইসলাম গ্রহিতা হয়ে দলিল সম্পাদন করা হয়েছে। ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে নওগাঁ যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে সম্পাদিত ও রেজিস্ট্রিকৃত দলিল বাতিলের মামলা করেন। যার নম্বর ১০৫/১৩।

ভুক্তভোগী বাবা আব্বাস আলী শাহ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমার ছেলে কাল্পনিক ভূয়া দলিল তৈরী করে পরে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদারের যোগসাজসে নামজারি করে নেয়। স্ত্রী, ছেলে-মেয়েদের কোন প্রকার জমি হেবাবিল এওয়াজ করে দিয়নি। এছাড়া আমার পেটের পীড়ার উন্নত চিকিৎসা ও ডাক্তার বরাবর এগ্রিমেন্ট (চুক্তিনামা) লিখে দেয়ার কথা বলে ছেলে ২০১১ সালে সুকৌশলে স্ট্যাম্পে ও ছবিতে স্বাক্ষর করে নেয়। পরে ডিকলারেশন অফ হেবা দলিল সম্পাদক করে ১ একর ৬ দশমিক ৬ শতাংশ দলিল করে নেন। আমার ছেলে একজন ঠক ও প্রতারক প্রকৃতির। আদালতে দলিল বাতিলের মামলার এবং দুদকে অভিযোগ করায় পর থেকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি অব্যহৃত রয়েছে।

এব্যাপারে ছেলে রফিকুল ইসলাম শাহ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বাবা আমাকে স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে জমি লিখে দিয়েছেন। এখানে আমার বলার কিছুই নাই। আদালতে মামলা আছে। আদালতেই বুঝবো। তবে কাল্পনিক ভুয়া দলিলের বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে চান না।

মান্দার প্রসাদপুর-কাশোঁপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে সদ্য বদলি হয়ে উপজেলার মৈনম-গনেশপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগদান করেছেন তহসিলদার এসএম এনামুল হক। কাল্পনিক ভূয়া দলিল দিয়ে রফিকুল ইসলামকে নামজারি করে দিলেও অস্বীকার করে তিনি বলেন, তৎকালিন তহসিলদার এটা করেছেন। দলিল ভূয়া বা কাল্পনিক আদালত নির্ধারন করবে। তবে ভুক্তভোগী আব্বাস আলী পরবর্তীতে নামজারি বাতিলের জন্য আবেদন করেছিলেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি রিপোর্ট প্রদান করা হয়।

মান্দা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম হাবিবুল হাসান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, কে কিভাবে জমি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন তা বোঝার উপায় নাই। তবে আমরা কাগজপত্র দেখে খাজনা খারিজ করা হয়ে থাকে। নামজারি বাতিলের বিষয়ে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যদি অভিযোগ পাই তদন্ত সাপেক্ষে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নওগাঁ প্রতিনিধি মো: আব্বাস আলী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.