মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে আইনের আওতায় বিচার করা হবে : আইনমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি: যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উদযাপিত হয়েছে। আলোচনা সভা, সেমিনারসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা দিবসটি উদযাপন করে।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) স্থানীয় একটি হোটেলে ‘মানব মর্যাদা, স্বাধীনতা আর ন্যায়পরায়ণতায় দাঁড়াবো সবাই মানবাধিকার সুরক্ষায়’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন নবনিযুক্ত সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা। অনুষ্ঠানে কমিশনের নবনিযুক্ত অবৈতনিক সদস্য আমিনুল ইসলাম, কংজরী চৌধুরী, ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, ড. তানিয়া হক, কাওসার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে দৃঢ় অঙ্গীকার জানান। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে নিরপেক্ষ ও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশে যে বা যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে, তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে। আমরা বঙ্গবন্ধুর হত্যাসহ সব বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করেছি। আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে কাজ করছি। মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। অথচ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেউ কেউ আমাদের নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করার চেষ্টা করছে।’
বৈষম্যবিরোধী আইন প্রণয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা খুব শিগগির বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছি। এটি এখন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে পরীক্ষাধীন আছে।’
বিশেষ অতিথি মো. মইনুল কবির বলেন, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। মন্ত্রণালয় থেকে তাদের বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে যখন কমিশন গঠিত হয়, তখন বাজেট ছিল মাত্র ১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। বর্তমানে সেটি ১২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। স্বল্প সময়ে কমিশন এশিয়া প্যাসিফিক ফোরামের সদস্য নিযুক্ত হয়েছে এবং বি স্ট্যাটাস পেয়েছে। বর্তমান সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হলো বৈষম্যবিরোধী আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ। আশা করি আমরা শিগগির আইনটি বলবৎ করতে পারবো।’
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরপরই ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়েছিল। তাই এই দিনটি স্মরণীয় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের উদ্ভব হয়েছে অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ফসল হিসেবে। আর এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আমাদের মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শোষণমুক্ত সংগ্রামের সূচনা করেছিলেন।’
বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশ চারবার জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদ লাভ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফলে মানবাধিকার প্রশ্নে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল হয়েছে। মানবাধিকারের দর্শন হলো বৈষম্যহীন জীবন। বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য নিয়েই আমরা আমাদের কাজ করে যাবো।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.