ময়মনসিংহের পুকুরে চাষ হচ্ছে ১৫০ কেজি ওজনের পাঙ্গাস মাছ

 

ময়মনসিংহ ব্যুরো: দৈত্যাকৃতির পাঙ্গাস মাছ। যার একেকটির ওজন ১৫০ থেকে ১৬০ কেজি পর্যন্ত। একটি দুটি নয় এই পুকুরে আছে এমন অর্ধশত পাঙ্গাস। রূপালী ধূসর রঙের বৃহৎদাকার এই পাঙ্গাসের নাম ‘মেকং জায়ান্ট ক্যাটফিস’। এদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মেকং নদী অববাহিকায়।
এই মাছটি ২০০৫ সালে বিশ্বের অন্যতম স্বাদুপানির বৃহত্তম মাছের গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অর্জন করে। অতিরিক্ত আহরণ এবং বাসস্থানের ক্ষতির কারণে এটি তার জন্মস্থানে বিপন্ন হয়ে গেলেও বাংলাদেশের ময়মনসিংহে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা পুকুরে আছে ৫০টি মাছ। সেগুলো থেকে প্রজনন করে এই মাছের বংশ বিস্তারের চেষ্টা করছেন গবেষকরা।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, পাঙ্গাসের বিপন্নপ্রায় এই প্রজাতিটি ২০০৫ সালে প্রথম একটি বেসরকারি খামারে আনা হয়। সেখান থেকে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৫০টি মাছ সংগ্রহ করে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট। গত ৬ বছরে এই মাছগুলোর ওজন হয়েছে ১২০ থেকে ১৫০ কেজি পর্যন্ত। যার সর্বোচ্চ ওজন হতে পারে ৩০০ কেজি পর্যন্ত।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আসফ উদ দৌলাহ বিটিসি নিউজকে জানান, পাঙ্গাস মাছের এই প্রজাতিটির চোয়াল ও দাঁত নেই। এটি তৃণভোজী কিন্তু রাক্ষুসী নয়। ১০ মিটারের বেশি গভীরতার জলাশয় এদের বসবাসের আদর্শ জায়গা। মাছটি পানির নিচে পাথর কিংবা নুড়ি স্তরে থাকতে পছন্দ করে। একটি পরিপক্ক মা মাছ থেকে প্রজননকালে প্রায় ৬০ থেকে ৮০ লাখ ডিম পাওয়া যায়। আগামী ২ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে মাছটির প্রজনন সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে চাষি পর্যায়ে মাছটি পৌঁছানো গেলে বাংলাদেশের পাঙ্গাস চাষে বিপ্লব ঘটবে বলে দাবি করে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. জুলফিকার আলী বিটিসি নিউজকে বলেন, আমরা এটির প্রজননের চেষ্টা করছি। এটি চাষি পর্যায়ে পৌঁছানো গেলে অল্প খরচে অনেক লাভ পাওয়া যাবে। এটি দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিশ্বের বাজারেও রফতানি করা সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।
তবে উপযুক্ত পরিবেশ ও আবাসস্থল গড়ে তুলতে না পারলে মাছটির প্রজননে সফলতা অর্জন সম্ভব নয় বলেও মনে করেন গবেষকরা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান মো. সাইফুল ইসলাম (সাইফুল)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.