ভারতে হিন্দু মেয়ে-মুসলিম ছেলের বিয়ে বন্ধে আইন চায় বিজেপি

(ভারতে হিন্দু মেয়ে-মুসলিম ছেলের বিয়ে বন্ধে আইন চায় বিজেপি)

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে মুসলিম যুবকদের সঙ্গে হিন্দু মেয়েদের বিয়ে বন্ধে ভারতে আইন করে বন্ধ করার কথা বলছে দেশটির উত্তরপ্রদেশ বা হরিয়ানার মতো একাধিক রাজ্য। এমন বিষয়কে বিজেপি ও তাদের সমমনা দলগুলো ‘লাভ জিহাদ’ নামে আখ্যায়িত করে।

এ বিষয়ে উত্তরপ্রদেশের বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানান, ‘হিন্দু মেয়েদের ইজ্জত নিয়ে ভিন্ন ধর্মের যারা খেলবে তারা যেন নিজেদের অন্ত্যেষ্টি যাত্রার জন্য প্রস্তুত থাকে!’ এদিকে ভারতের মুসলিম নেতারা জানাচ্ছেন, আইন করে তথাকথিত ‘লাভ জিহাদ’ ঠেকানোর প্রস্তাব অসাংবিধানিক।

গত সপ্তাহে দিল্লির বেশ কাছে হরিয়ানার বল্লভগড়ে নিকিতা তোমর নামে এক হিন্দু মেয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার পর ‘লাভ জিহাদ’ নিয়ে ভারতে আবার নতুন করে তুমুল হইচই শুরু হয়। নিকিতার পরিবারের অভিযোগ এক মুসলিম যুবক ভালোবাসার ফাঁদে ফেলে মেয়েটিকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। এর পরই হরিয়ানা জুড়ে শুরু হয়েছে লাভ জিহাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ।

এরই মধ্যে হরিয়ানা রাজ্যের মন্ত্রী অনিল ভিজ ঘোষণা করেছেন, হিন্দু মেয়েদের রক্ষা করতে লাভ জিহাদের ‘চিকিৎসা করা জরুরি।’ এ প্রসঙ্গে আইন করার প্রস্তাব দিলে তাতে সায় দেন প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল।

এদিকে ভারতের এলাহাবাদ হাইকোর্টও তাদের এক সাম্প্রতিক রায়ে মন্তব্য করেছেন, শুধু বিয়ে করার জন্য কেউ যদি ধর্মান্তরিত হয় তাহলে সেই ধর্মান্তর বৈধ বলে গণ্য হবে না।

এদিকে ভারতের অন্যতম মুসলিম রাজনীতিবিদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি জানান, এটা ভারতীয় মুসলিমদের ‘ভিলেন’ বানানোর অপচেষ্টা। এছাড়া অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য জাফরিয়াব জিলানিও দাবি করেছেন, লাভ জিহাদের বিরুদ্ধে আইন করার কোনও এখতিয়ারই মুখ্যমন্ত্রীর নেই।

অন্যদিকে সমাজ বিজ্ঞানী দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. চারু গুপ্তা জানান, লাভ জিহাদের বিরুদ্ধে আইন করার কথা বলে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের ধর্মীয় আবেগেই সুড়সুড়ি দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এই লাভ জিহাদের ব্যাপারটাও তাই, এবং মুসলিমরা আমাদের পরিবারের ভেতরে ঢুকে পড়ছে এই ভয় প্রায় প্রতিটা হিন্দু ঘরেই কাজ করে – আর সেটাকেই এখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হচ্ছে।’

এদিকে ভারতের জাতীয় মহিলা কমিশন টুইটারে একটি টুইটে লাভ জিহাদ শব্দটি ব্যবহার করেছে।

উদ্বেগজনক হারে এমন ঘটনা বাড়ছে বলে দাবী করে তারা বিষয়টি নিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন জানা গেছে। (সূত্রঃ- বিবিসি বাংলা)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.