ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততেই হবে। না হলে এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলার আশা কার্যত শেষ হয়ে যাবে ভারতের। এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে টস হেরে আগে ব্যাটিং করে শ্রীলঙ্কাকে ১৭৪ রানের লক্ষ্য দেয় ভারত। যে লক্ষ্য মাত্র ৪টি উইকেট হারিয়েই টপকে গিয়ে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালের টিকিট কাটে শ্রীলঙ্কা।
এক বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটের দুরন্ত জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে সুপার ফোরে টানা দুই ম্যাচ হেরে ফাইনালে যাওয়া কঠিন থেকে কঠিনতর করে ফেলল রোহিতের দল।
১৭৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ভারতের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরুটা দেখেশুনে করলেও চতুর্থ ওভার থেকেই হাত খুলে খেলা শুরু করেন লঙ্কান দুই ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই দলগত ৫০ রানের গণ্ডি টপকে যায় শ্রীলঙ্কা। এমনকি ওপেনিং জুটিতেই ৬৭ বলে তুলে ফেলে ৯৭টি মূল্যবান রান।
কিন্তু এরপরেই ঘটে ছন্দপতন। ঠিক ছন্দপতন বললে ভুল হবে, রীতিমত বিপর্যয়! মাত্র ১৩ রানের ব্যবধানে দুই ওপেনারসহ ৪টি উইকেট হারিয়ে দারুণ চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। তবে ভানুকা রাজাপাকশেকে সঙ্গী করে সেই বিপর্যয় কাটিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন দলনায়ক দাসুন শানাকা। 
মাত্র ৩৪ বলে অনবদ্য ৬৪ রানের ম্যাচজয়ী জুটি গড়েন দুজনে। এরমধ্যে শানাকা করেন মাত্র ১৮ বলে ৩৩ রান। ম্যচজয়ী এই ইনিংস খেলার পথে চারটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান শানাকা। তার সঙ্গী ভানুকা অপরাজিত থাকেন ১৭ বলে দুই ছক্কায় ২৫ রানের ইনিংস খেলে।
এর আগে ৯৭ রানের জুটি গড়ার মধ্যদিয়ে ফিফটি হাঁকান দুই ওপেনার। দুজনেই খেলেন সমান ৩৭টি করে বল। এরমধ্যে নিসাঙ্কা করেন চারটি চার ও দুই ছয়ে ৫২ রান। আর চারটি চার ও তিন ছয়ের মারে ৫৭ রান করে আউট হন মেন্ডিস। তবে দুটি উইকেট ও ৩৩ রান করে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হন অধিনায়ক দাসুন শানাকাই।
ভারতের পক্ষে এদিন দ্রুত ৩টি উইকেট তুলে নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে চাপে ফেলে দেন লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল। তবে অন্য বোলারদের তেমন সহযোগিতা না পাওয়ায় পরাজয় এড়াতে পারেনি ভারত।
এর আগে দুবাইয়ে স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় অনুষ্ঠিত টসে জয়লাভ করে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাসুন শানাকা।
ফলে আগে ব্যাটিং পেয়ে যথারীতি লোকেশ রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে ওপেন করতে নামেন রোহিত শর্মা। আগের তিন ম্যাচে রান না পাওয়া ভারত অধিনায়ক এদিন রীতিমত ঝড় তোলেন ব্যাটে। দলীয় মাত্র ১৩ রানে দুই উইকেট হারানোর পর সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে গড়েন ৫৮ বলে ৯৭ রানের জুটি।
এই জুটি গড়ার পথে মাত্র ৩২ বলে ফিফটি তুলে নেন রোহিত। শেষ পর্যন্ত আউট হন দলীয় সর্বোচ্চ ৭২ রানের ইনিংস খেলে। তার ৪১ বলের এই ঝোড়ো ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও চারটি ছয়ের মার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৪ রান আসে তার সঙ্গী সূর্যকুমার যাদবের ব্যাট থেকে। একটি করে ছয় ও চারে ২৯ বলে ৩৪ করেন যাদব। এছাড়া পান্ডিয়া ও পন্ট দুজনেই আউট হন সমান ১৩ বলে ১৭ রান করে।
শেষ দিকে শেষ ওভারে ৮ রানসহ মাত্র ৭ বলে ১৫ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে দলীয় স্কোরকে ১৭৩ রানে পৌঁছে দেন অশ্বিন। যদিও রোহিত-যাদব ক্রিজে থাকতে মনে হচ্ছিল আজ দুইশ ছাড়াবে তারা!
তবে আফগান ম্যাচের মতো এদিনও শেষ পাঁচ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করে ম্যাচে কামব্যাক করে লঙ্কান বোলাররা। ৪৬ রান দিলেও তারা তুলে নেন ৪টি উইকেট।
লঙ্কান বোলারদের মধ্যে এদিন সফল বোলার ছিলেন দিলশান মদুশঙ্কা। মাত্র ২৪ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন এই বাঁহাতি পেসার। আর ২৭ রান খরচায় ২টি উইকেট লাভ করেন চামিকা করুনারত্নে। এছাড়া দুই ওভার হাত ঘুরিয়ে ২৬ রান দিয়ে ২টি উইকেট তুলে নেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা।
এদিকে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরেই কার্যত টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেল ভারত। টিম ইন্ডিয়া এদিন হেরে যাওয়ায়, শ্রীলঙ্কার পয়েন্ট হল চার। সেইসঙ্গে ফাইনালে যাওয়ার পথটা অনেকটাই সুগম করে ফেলল দ্বীপরাষ্ট্রটি। সেখানে ভারতের পয়েন্ট এখন শূন্য।
কার্যত এতেই শেষ হয়ে গেল ভারতের ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ! কেননা তাদের হাতে আছে মাত্র একটি ম্যাচ- আফগানদের বিপক্ষে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.