বিশ্বকাপ ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত-৬

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুরে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উভয়পক্ষই আর্জেন্টিনা সমর্থক বলে জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধা আনুমানিক ৬টার সময় উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের মিল্কি বাজারে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিরা হলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল হকের ভাই শাহিন, চাচাতো ভাই আত্বাব আলী ও ছফর মোল্লা। অপরদিকে রাজ্জাক আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম, সামাদ হোসেন ও ছোট ভাই আবু বক্কর।
জানা যায়, মিল্কি বাজারের দক্ষিন পার্শ্বে চাপিলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সামসুল হকের ভাই,ভাতিজা ও তার সমর্থকরা তাদের নিজস্ব জায়গার ওপর প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখে আসছে। অপরদিকে বাজারের উত্তর পার্শ্বে একই এলাকার অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক রাজ্জাক আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম, সামাদ হোসেন ও তার সমর্থকরা প্রজেক্টরের মাধ্যমে খেলা দেখছিলো। উভয় পক্ষই আর্জেন্টিনার সমর্থক।
বৃহস্পতিবার সন্ধায় সামসুল হক বাজারে চা খেতে গেলে তার সাথে দ্বন্দে জড়িয়ে পরেন সামাদ ও সাইফুল। দ্বন্দের এক পর্যায়ে সামসুল হকের প্রজেক্টরে খেলা পরিচালনা করতে নিষেধ করে সামাদ। তর্ক বিতর্ক করতে করতে দুই পক্ষের লোকজন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। ঘটনাস্থলেই উভয় পক্ষের ৬ জন গুরুত্বর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করেন।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল হক জানান, আমার ছেলে,ভাই,ভাতিজারা মিল্কি বাজারের দক্ষিন পার্শ্বে আমাদের নিজস্ব জায়গার ওপর একটি ব্যাড মিন্টন মাঠ তৈরি করে। সেখানে একটি প্রজেক্টরও সেট করা হয়। প্রজেক্টরের মাধ্যমে গ্রামের অনেক মানুষ বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা উপভোগ করে।
বৃহস্পতিবার সন্ধায় বাজারে চায়ের দোকানে আমি চা পান করছিলাম। সেই মুহুর্তে প্রতিবেশি রাজ্জাক মাস্টারের ছেলে সামাদ ও সাইফুল আমাকে এসে আমাদের প্রজেক্টর এবং ব্যাড মিন্টন খেলার মাঠ বন্ধ করতে বলেন। আমি তাদেরকে বোঝাঁনোর চেষ্টা করলে আমাকে বলে কথা বললেই মারপিট করা হবে।
এক পর্যায় বাজারের মধ্যে তর্ক বিতর্ক শুরু হয় সাইফুল ও সামাদের সাথে। পরে আমার কাছে আমার ছোট ভাই ও দুই চাচাতো ভাই এগিয়ে আসলে অতর্কিত ভাবে সাইফুল,সামাদ ও তার সমর্থকরা দেশিয় অস্ত্র চাইনিজ কুড়াল, হাসুয়া, লোহার রড দিয়ে মারপিট শুরু করলে উভয় পক্ষের মধ্যে একটা সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলেই গুরুত্বর রক্তাক্ত অবস্থায় চাচাতো দুই ভাইে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আর আমার ছোট ভাই মোতালেব হোসেনকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে রাখা হয়েছে।
এ দিকে সাইফুল ও সামাদের বাবা রাজ্জাক আলী জানালেন, অনেক আগে থেকে আমার ছেলেরা প্রজেক্টরের মাধ্যমে গ্রামের মানুষকে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখায়। বাজারের মাত্র ১০০ ফিট দুরুত্বে দুইটি প্রজেক্টর চললে বিষয়টি খারাপ দেখায়। এ নিয়ে বাজারে ৮-১০ আগে একটি শালিসও হয়েছে। শালিসে যে কোন একটি প্রজেক্টর চালানোর রায় হয়েছিলো। এ জন্য আমার ছেলেরা তাদেরকে বুঝাতে গিয়েছিলো। হঠাৎ সামসুল হকের ভাই ভাতিজারা আমার ছেলে ও সমর্থকদের অপর অতর্কিত হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই আমার দুই ছেলে ও ছোট ভাই গুরুত্বর আহত হয় । সকলকেই রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল মতিন বিটিসি নিউজকে জানান, এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ এখনও পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.