বিধান পরিষদ গঠনের পক্ষেই মত দিল বিধানসভা

(বিধান পরিষদ গঠনের পক্ষেই মত দিল বিধানসভা)
হুগলি (কলকাতা) প্রতিনিধি: পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা দখলের প্রায় এক দশক পরে সফল হতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্ন। অবশেষে গঠিত হতে চলেছে বিধান পরিষদ।
১৯৬৯ এ বাংলায় অবলুপ্তি ঘটেছিল বিধান পরিষদের। ২০১১ তে রাজ্যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরে বিধান পরিষদ পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভায় প্রস্তাবও আসে। তৈরি হয় অ্যাড হক কমিটি। কিন্তু তার পরে আর এগোয়নি বিষয়টা। গত মে-তে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরে এসেই এ ব্যাপারে তৎপরতা শুরু করেন তিনি।
শেষপর্যন্ত গতকাল মঙ্গলবার বিধানসভায় দুই-তৃতীয়াংশের ভোটে গৃহীত হয় বিধান পরিষদ ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব। বিরোধীদল বিজেপি অবশ্য ঘোরতর আপত্তি জানিয়েছে এই উদ্যোগের। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীদের পুনর্বাসনের জন্যই মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগ। এর ফলে শুধুমাত্র পরিষদীয় কাজকর্মে জটিলতাই বাড়বে না, সময় নষ্ট হবে অযথা। বিধান পরিষদ গঠিত হওয়ার পরে ৫ বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ভারও চাপবে বলে বিরোধীপক্ষের আশঙ্কা।
লক্ষ্যণীয়, এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন মোট ১৯৬ জন বিধায়ক, বিপক্ষে ৬৯ জন। এর মধ্যে ৬৮ জন বিজেপি বিধ্যায়ক। বিধানসভায় গণতান্ত্রিক মোর্চার একমাত্র প্রতিনিধি নওয়াজ সিদ্দিকিও ভোট দেন প্রস্তাবের বিপক্ষে।
তবে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যুক্তি, বিধান পরিষদ ফিরে এলে রাজ্যে সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিবেশ আরও প্রসারিত হবে। শুধু বুদ্ধিজীবীরা নন, সমাজের সব শ্রেণির মানুষেরই প্রতিনিধিত্ব থাকবে এখানে। জানা গেছে, সর্বোচ্চ ৯৮ টি আসন থাকবে বিধান পরিষদে। যা কখনওই বিধানসভার মোট আসনের এক তৃতীয়াংশের বেশি নয়।
তবে বিধান পরিষদের আবার আত্মপ্রকাশ এখনও হয়তো কিছুটা সময় সাপেক্ষ। কারণ, রাজ্যপালের সম্মতি মেলার পরে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় এই প্রস্তাব গৃহীত হতে হবে। তারপরে রাষ্ট্রপতির চূড়ান্ত সম্মতির অপেক্ষা।
শোনা যাচ্ছে, কংগ্রেস এবং সিপিএম সহ বামেদের কয়েকজনকে জায়গা দেওয়া হতে পারে নতুন বিধান পরিষদে। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এবং বামেদের একজন প্রার্থীও যেহেতু জয়ের মুখ দেখেননি, তাই এই ২ দলের প্রতিনিধিত্বের ব্যাপারে আগ্রহী তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিরোধী দল হিসেবে বিধানসভায় বিজেপি-র একতরফা দাপট আটকাতে এটা একটা কৌশল হতে পারে তৃণমূলের।
অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র সহ মোট ৬টা রাজ্যে এখনও অস্তিত্ব আছে বিধান পরিষদের। অবলুপ্তি ঘটেছে অনেক রাজ্যেই।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর কলকাতাহাওড়া (ভারত) প্রতিনিধি সৌম্য সিংহ। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.