বালিশকেও হার মানিয়েছে মেডিক্যালের এক সেট পর্দা, অস্বাভাবিক সরকার, কোথাও নিয়ন্ত্রণ নেই : ড. মোশাররফ

ঢাকা প্রতিনিধি: বিএনপি ভোটের রাজনীতি থেকে হারিয়ে গেছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাতে আওয়ামী লীগ সারা জীবনের জন্য ভোটের রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছে। আজ কারা এদেশ নেতৃত্ব দিচ্ছে ভোট ছাড়া? গায়ের জোড়ে? অস্বাভাবিক একটা সরকার। অস্বাভাবিক না হলে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বালিশের মতো দুর্নীতি হতো না। এখন তো সেই বালিশকেও হার মানিয়েছে মেডিক্যালের এক সেট পর্দা। এক সেট পর্দার দাম ৩৭ লক্ষ টাকারও বেশী। এটা হয়েছে কারণ সরকারের কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।

আজ শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বিএনপি’র ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র ও শহীদ জিয়ার অবদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা যেখানেই জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আলোচনা করবো, সেখানেই আওয়ামী লীগ ব্যর্থ; বিএনপি সফল। সেজন্য তারা জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস থেকে মুছে দিতে চায়। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের মা। যেহেতু গণতন্ত্র আওয়ামী লীগের পছন্দ নয়, সেজন্যই নেত্রীকে কারাগারে রাখা হয়েছে।

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, তারা মনে করেছিল নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখলে আমরা একাদশ জাতীয় নির্বাচনে যাব না। তারপরও আমরা নির্বাচনে গেলাম। সেই অবস্থায় দেশের ৮০ ভাগ মানুষ ধানের শীষে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। সেজন্যই তারা ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোট কারচুপি করেছিল।

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বর্তমান সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ব্যাংকের মাধ্যমে লুট করেছে। কিন্তু এর কোনো বিচার নেই। খেলাপি ঋণ বাড়ছে, তারপরও তাদের আরও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যারা বালিশ ও পর্দা কেনার দায়িত্বে ছিল, তারা মনে করে এটা বেশী কিছু না। কারণ গত ১০ বছরে তাদের সুইস ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা রয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারের কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। দেশের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত কোথাও দুর্নীতি বাকি নেই। ফলে সমাজে পচন লেগেছে। আজকে এই যে দুর্নীতির প্রকারভেদ দেখছি, সেটা হয়েছে দেশে গণতন্ত্রের অভাবে। যদি সরকার জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হতো, তাহলে জনগণের কাছে সরকারের দায়বদ্ধতা থাকতো। যেহেতু দায়বদ্ধতা নেই, সেহেতু যে যা ইচ্ছা তাই করছে।

বিএনপি’র এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি টিকে আছে তৈরি পোশাক ও জনশক্তি রফতানির ওপর। এই দুইটারই প্রবর্তক ছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনিই বাংলাদেশি জাতি গঠনে ইস্পাত কঠিন গণঐক্য গঠন করেছিলেন।

তিনি বলেন, বাকশালের সময় দেশে যেই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা ছিল, এখনও দেশে সেই অবস্থা বিরাজমান। অতএব আমাদেরকেই এই পরিস্থিতি থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করে গণতন্ত্রকে পুনউদ্ধার করতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ও আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো। খালেদা জিয়া মুক্তি না পেলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না। কারণ তিনি গণতন্ত্রের মা। তার মুক্তি হলেই জনগণের, গণতন্ত্রের ও অর্থনীতির মুক্তি মিলবে।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোটের প্রধান সমন্বয়কারী হুমায়ূন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মো: ফারুক আহম্মেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.