বায়োপিক: মাইকেল জ্যাকসনের চরিত্রে কে অভিনয় করছেন?

বিটিসি বিনোদন ডেস্ক: পপসম্রাট মাইকেল জ্যাকসন বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষাপটে চার দশকেরও বেশি সময় সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বৈশ্বিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে দাপট চালিয়েছেন। ১৯৮০-এর দশকে তার জনপ্রিয়তা ছিল আকাশছোঁয়া। পপসাম্রাজ্যের বাদশাহ মাইকেল জ্যাকসন গান, নাচ ও ফ্যাশনে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। সবার কাছে জ্যাকশন মানেই ছিল এক আইডল।
মাইকেলের মৃত্যু নিয়ে যেমন ধোঁয়াশা রয়েছে ঠিক তেমন তার জীবনটাও অজানা আমাদের কাছে। পরতে পরতে জড়িয়ে রহস্য। তাকে নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই।
মৃত্যুর ১৪ বছর পরেও পর্দা ফিরছেন মাইকেল। এবার কোটি কোটি ভক্তদের জন্য তার বায়োপিক নির্মাণ হচ্ছে। বায়োপিকে পপ সম্রাটের ভূমিকায় অভিনয় করছেন তারই ভাতিজা জাফর জ্যাকসন।
জাফর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি প্রকাশ করেছেন। সাদাকালো সেই ছবিতে দূর থেকে মাইকেলকে দেখা যাচ্ছে। শিল্পীর নাচের মুদ্রা সেখানে অনুরাগীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। মাইকেলের জনপ্রিয় নাচের মুদ্রার মধ্যে ‘মুন ওয়াক’ এবং ‘টো স্ট্যান্ডিং’ রয়েছে। ছবিতে জাফরকে দ্বিতীয় নাচটি পরিবেশন করতে দেখা যাচ্ছে।
ইনস্টাগ্রামে ছবিটি পোস্ট করে জাফর লিখেছেন- ‘সোমবার (২২ জানুয়ারি) থেকে সফর শুরু হবে।’ মাইকেলের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টেও এই একই ছবি পোস্ট করে লেখা হয়েছে- ‘ছবির জন্যও প্রস্তুত।’
মাইকেলের বায়োপিকে শিল্পীর জীবনের কোন কোন অংশ দেখানো হবে, তা আপাতত নির্মাতারা আড়ালেই রেখেছেন। জাফর নিজে একজন গায়ক এবং নৃত্যশিল্পী।
জাফরকে এ চরিত্রে নির্বাচন প্রসঙ্গে মাইকেলের মা ক্যাথরিন জ্যাকসন বলেন, ‘জাফরকে আমার ছেলের মতোই দেখতে। জ্যাকসনের জনপ্রিয়তাকে ও যে এগিয়ে নিয়ে চলেছে সেটা দেখে আমি গর্বিত।’
মাইকেল জ্যাকসনের বায়োপিকটি নির্মাণ করছেন অ্যান্তোনি ফুকওয়া। লায়নসগেটের প্রযোজনায় মাইকেলের বায়োপিকের কাজ শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। আন্তর্জাতিক বাজারে এ ছবির স্বত্বও কেনা হয়ে গেছে।
গ্রাহাম কিংয়ের সঙ্গে যৌথভাবে এ বায়োপিকের প্রযোজনা করছেন জন ব্রাঙ্কা ও জন ম্যাকক্লেন। তারা মাইকেল জ্যাকসন এস্টেটের কোএক্সিকিউটরও। গ্ল্যাডিয়েটর এবং দ্য অ্যাভিয়েটর খ্যাত জন লোগান ইতোমধ্যেই চিত্রনাট্য লেখা শুরু করেছেন।
মাইকেল জোসেফ জ্যাকসন ১৯৫৮ সালের ২৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেন। পরিবারের অষ্টম সন্তান ছিলেন তিনি। সংগীত পরিবারে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তাই মাত্র ৫ বছর বয়সেই স্টেজে গান শুরু করেন মাইকেল। তবে তার খ্যাতি আসে সত্তরের দশকের শেষ ও আশির দশকে।
জ্যাকসনের গাওয়া পাঁচটি সংগীত অ্যালবাম বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রীত রেকর্ডের মধ্যে রয়েছে। সেগুলো হলো- ‘অব দ্য ওয়াল (১৯৭৯), থ্রিলার (১৯৮২), ব্যাড (১৯৮৭), ডেঞ্জারাস (১৯৯১) এবং হিস্টরি (১৯৯৫)। এর মধ্যে ‘থ্রিলার’ আজ পর্যন্ত ১১২ মিলিয়নের ওপর বিক্রি হয়েছে, যা সর্বোচ্চ বিক্রীত হওয়া অ্যালবাম।
সংগীতের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৪ সালে আটটি গ্র্যামি পুরস্কার অর্জন করে রেকর্ড গড়েছিলেন ‘পপ কিং’ মাইকেল জ্যাকসন। এক আসরে এতগুলো গ্র্যামি পুরস্কার ঝুলিতে ভরার রেকর্ড এত বছরেও ভাঙতে পারেননি আর কোনো সংগীতশিল্পী।
মোট ১৩টি গ্র্যামি পুরস্কার পেয়েছিলেন জ্যাকসন। তিনিই সবচেয়ে বেশি অ্যাওয়ার্ড ও নমিনেশন পাওয়া তারকা। এজন্য হলিউড ওয়াক অব ফেমে ঠাঁই পেয়েছে তার নামে দুটি তারা। একটি তার নিজের জন্য। আরেকটি জ্যাকসন ফাইভ ব্যান্ডের সদস্য হিসেবে।
তিনি মারা যান ২০০৯ সালের ২৫ জুন। মাত্রাতিরিক্ত প্রপোফল সেবনে ৫০ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তার। তার মৃত্যুতে সারা পৃথিবীতে শোরগোল পড়ে যায়। ভেঙে পড়েছিল ইন্টারনেট ব্যবস্থা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.