বাংলাদেশকে ১৫৩ রানের লক্ষ্য দিল জিম্বাবুয়ে

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ে ১৫৩ রানের লক্ষ্য দিয়েছে টাইগারদের। আজ বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টায় টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯ ওভারে সব কয়টি উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।
শুরুর একটা সময় মনে হচ্ছিল অনায়াসেই ১৭০-১৮০ রান পার করে ফেলবে জিম্বাবুয়ে। ১০ ওভার শেষে স্বাগতিকদের বোর্ডে ছিল ২ উইকেটে ৯১ রান। সেখান থেকে দারুণ কামব্যাক বাংলাদেশি বোলারদের।
২৮ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে জিম্বাবুয়ের বড় স্কোর গড়ার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়েছেন সাইফউদ্দিন-শরিফুল-মোস্তাফিজরা। হারারে স্পোর্টস ক্লাবে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মারকুটে ব্যাটিংয়ে শুরু করা জিম্বাবুয়েই এক ওভার বাকি থাকতে অলআউট হয়েছে ১৫২ রানে। অর্থাৎ শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটিকে স্মরণীয় করতে রাখতে টাইগারদের করতে হবে ১৫৩ রান।
টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ শুরু করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ডানহাতি এই পেসারের ওই ওভারে মাত্র তিন রান নিতে পারে স্বাগতিকরা।
পরের ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানকে ছক্কা হাঁকিয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তাদিওয়ানাশে মারুমানি। কিন্তু জিম্বাবুইয়ান ওপেনারের ওই আগ্রাসী চেহারা বেশিক্ষণ টেকেনি।
দুই বল পরই কাটার মাস্টার তার বড় অস্ত্র স্লোয়ারে বিভ্রান্ত করেন মারুমানকে (৭ বলে ৭)। ডিপ মিডউইকেট থেকে অনেকটা দৌড়ে এসে দুর্দান্ত এক ডাইভিং ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার। ১০ রানে প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
দ্বিতীয় উইকেটে ওয়েসলে মাদভেরে আর রেগিস চাকাভা ৬৪ রানের আক্রমণত্মক জুটি গড়েন। পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে ১ উইকেটেই ৫০ রান তুলে ফেলে জিম্বাবুয়ে।
মাদভেরের সঙ্গে জুটিতে মারকুটে ব্যাটিং করেছেন মূলত চাকাভা। অষ্টম ওভারে মাহেদি হাসান বল হাতে নিলে দুই ছক্কা আর এক বাউন্ডারি হাঁকান উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান। ওই ওভারে আসে ১৮ রান।
তবে পরের ওভারেই জুটিটি ভেঙে দেন সাকিব। টাইগার অলরাউন্ডারের ঘূর্ণি বুঝতে না ফিরতি ক্যাচ দেন মাদভেরে (২৩ বলে ২৩)। অনেকটা লাফিয়ে উঠে সেই ক্যাচটি তালুবন্দী করেন সাকিব।
শরিফুল ইসলামের করা একাদশতম ওভারে এসে জোড়া ধাক্কা খায় জিম্বাবুয়ে। দারুণ খেলতে থাকা চাকাভা (২২ বলে ৫ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ৪৫) রানআউট হন উইকেটরক্ষক নুরুল ইসলাম সোহানের বুদ্ধিমত্তায়।
ওভারের প্রথম বলেই স্কুপ খেলতে চেয়েছিলেন চাকাভা, সেই বলটি ক্যাচের মতো উঠলেও সেটি সোহানের সামনে পড়ে। রান নিতে যান চাকাভা। টাইগার উইকেটরক্ষক চোখের পলকে এক হাতের গ্লাভস খুলে ননস্ট্রাইক এন্ডের স্ট্যাম্প ভেঙে দেন।
ওই ওভারেরই পঞ্চম বলে শরিফুলের সুইংয়ে কাট করে সোহানের ক্যাচ হন জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক সিকান্দার রাজা (০)। ৯২ রানে ৪ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
তারিসাই মুসাকান্দা বেশিদূর যেতে পারেননি। সৌম্য সরকারের প্রথম ওভারে এলবিডব্লিউয়ের আবেদন থেকে বেঁচে গেলেও পরের ওভারে পায়ে বল লেগে ঠিকই সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তাকে। এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ৬ বলে করেন ৬ রান।
অভিষিক্ত ডিয়ন মায়ার্স ভয়ংকর হয়ে উঠছিলেন, ২১ বলেই ৩৫ রান তুলে ফেলা এই ব্যাটসম্যানকে ১৫তম ওভারের প্রথম বলে বোল্ড করেন শরিফুল। বাঁহাতি পেসারের দারুণ এক ডেলিভারিতে ওপরে যায় মায়ার্সের অফ স্ট্যাম্প। ওই ওভারে মাত্র এক রান দেন শরিফুল।
১৮তম ওভারে এসে চার বলের ব্যবধানে দুই উইকেট তুলে নেন সাইফউদ্দিন। ওভারের দ্বিতীয় বলে অফস্ট্যাম্পের বাইরের ইয়র্কার টেনে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন লুক জঙ্গি (১৬ বলে ১৮), চতুর্থ বলে রায়ান বার্ল হন বদলি ফিল্ডার শামীম পাটোয়ারির অসাধারণ ক্যাচ।
লং অনে কয়েক গজ দৌড়ে এসে ক্যাচটি তালুবন্দী করেন শামীম। তারপর ভারসাম্য ধরে রাখতে না পেরে ডাইভ দেন, কিন্তু শরীরটা বাঁকিয়ে নিয়ে বাউন্ডারির দড়ি ছুঁইছুঁই অবস্থায় নিজেকে সামলে রাখেন তিনি।
পরের ওভারেই শেষ দুই উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজ। প্রথমে দারুণ ইয়র্কারে স্ট্যাম্প ভাঙেন রিচার্ড এনগারাভার। পরে ব্লেসিং মুজারবানিও ক্রস খেলতে গিয়ে বল মিস করে হন বোল্ড।
মোস্তাফিজই ছিলেন বল হাতে সবচেয়ে সফল। ৪ ওভারে ৩১ রানে ৩টি উইকেট নেন কাটার মাস্টার। সাইফউদ্দিন সমান ওভারে ২৩ রানে ২টি আর শরিফুলের ৩ ওভারে ১৭ রানে শিকার ২ উইকেট। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.