ফরিদপুরে প্রস্তুত বিএনপি, লাখো জনসমাগমের আশা

ফরিদপুর প্রতিনিধি: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ফরিদপুরে আগামীকাল শনিবার ষষ্ঠ বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে আরেকটি বিশাল শোডাউন করতে যাচ্ছে বিএনপি।
এখন পর্যন্ত প্রথম পাঁচটি জনসভা সাফলভাবে শেষ করেছে দলটি। এতে বিএনপি সংখ্যায় ও সাংগঠনিক ক্ষমতার দিক থেকে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এবারও বাস ধর্মঘটকে উপেক্ষা করে গণসমাবেশের মাঠে আসতে শুরু করেছে নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে লোকে লোকারণ্য মাঠ।
চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর ও বরিশালে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আগামীকাল শনিবার (১২ নভেম্বর) ফরিদপুরে বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির ষষ্ঠ সমাবেশ হবে। এ উপলক্ষে আবদুল আজিজ ইনস্টিটিউট চত্বর আজ শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সকালে জমজমাট ছিল। কারণ, বিএনপি নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে সেখানে পৌঁছেছেন। আজ জুমার নামাজ মাঠেই আদায় করেন তারা। মাঠেই রান্না করে সেখানেই চলছে তাদের খাওয়া দাওয়া।
জেলার বাস মালিক সমিতির ডাকা ৩৮ ঘণ্টার ধর্মঘট আজ শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে। যদিও এই পরিবহন ধর্মঘট বিএনপি ও তার সমর্থকদের আর বাধা দিতে পারবে না বলে মনে করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীরা কমরপুর আবদুল আজিজ ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে একটি মঞ্চ তৈরি করেছেন। যেখানে শনিবার দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে, বিএনপির সমাবেশের একদিন আগে ফরিদপুর শহরের রাসেল মোড়ে বড় শোডাউন করেছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি ও জামায়াতের নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগ দাবি তুলে তার প্রতিবাদে জেলা আওয়ামী লীগের ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই শোডাউন করে দলটি। শহরে যখন এই শোডাউন চলছিল, তখন দুদিন আগে থেকে এসে প্রচারণা শুরু করা বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের সমাবেশস্থলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করে।
জানা গেছে, সমাবেশে যোগ দিতে বিভাগীয় পাঁচটি জেলা ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ থেকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ইতোমধ্যেই নগরে পৌঁছেছেন।
শুক্রবার সকাল থেকে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে তারা ট্রেন, ট্রাক, অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার, মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহন ও মাইক্রোবাসে করে সমাবেশস্থলে পৌঁছান।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ জানান, তাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন বাধা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাস ধর্মঘট ও গাড়ি চালানোর নিষেধাজ্ঞার কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সমাবেশে যোগ দিতে ফরিদপুরে আসছেন।
শামা ওবায়েদ অভিযোগ করে বলেন, ‘সমাবেশকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার থেকে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার শুরু করেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জনগণের ধারণা, ঐতিহাসিক কারণে ফরিদপুর আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি। তবে, পরিস্থিতি পাল্টেছে এবং শনিবার আমাদের বিশাল সমাবেশের মাধ্যমে তা প্রমাণিত হবে।’ তিনি বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ বিরক্ত। সেজন্যই মানুষ সব কষ্ট-যন্ত্রণা সহ্য করে আমাদের সমাবেশে আসছে।’
শামা জানান, তারা তাদের সমাবেশে এক লাখের বেশি লোকের অংশগ্রহণ আশা করছেন।
গত ৭ নভেম্বর গোলাম নাসির স্বাক্ষরিত চিঠির আলোকে আজ সকালে ফরিদপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ে। ফরিদপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, নতুন বাসস্ট্যান্ড ও ইমামউদ্দিন স্কয়ার এলাকায় গণপরিবহনের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
পরিবহন শ্রমিক হাবিবুর বলেন, ‘নেতৃবৃন্দের নির্দেশে আমরা ধর্মঘট করছি। আমাদের প্রতিদিনের রুটি রোজগারের জন্য নেতাদের নির্দেশ মেনে চলতে হবে।’
ফরিদপুরের জনসভায় জনগণকে বাধা দিতে সরকার নানা কৌশল অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি জানান, তারা (প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীরা) সফল হবে না এবং বিগত বিভাগীয় সমাবেশের মতো শনিবার (১২ নভেম্বর) ফরিদপুর জনসমুদ্রে পরিণত হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ফরিদপুর প্রতিনিধি মো. নাসির উদ্দিন নাসির। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.