প্রিগোজিনের মৃত্যুকে যেভাবে দেখছে বিশ্ব

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাবেক এই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর মৃত্যুতে রহস্যের ডালপালা মিলছে। পুতিনের বিরোধিতা করায় তার মৃত্যু হয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে তার মৃত্যুর খবরে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।
গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে রাজধানী মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গগামী একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। বিমানে সাতজন যাত্রী ও তিনজন ক্রু ছিল। যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন প্রিগোজিন ও ওয়াগনারের উপপ্রধানও। ব্যক্তিগত বিমানটি উড্ডয়নের আধা ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার পর ওই উড়োজাহাজে আগুন ধরে যায়। এখন পর্যন্ত ১০ জনেরই মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে নিশ্চিতভাবে প্রিগোজিনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র: বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার নেপথ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাত থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, প্রিগোজিনের সম্ভাব্য মৃত্যুর খবরে আমি অবাক নই।  নেভাদায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,  মস্কোর বিরুদ্ধে ওয়াগনারের বিদ্রোহের পর যে প্রিগোজিন রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তু হবে তা আমি আগেই ধারণা করেছিলাম। আমি জানি না কি ঘটেছে, কিন্তু আমি অবাক নই।
এ ছাড়া  যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র সাবেক এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, পুতিনের নির্দেশেই এই ঘটনা ঘটেছে।  মস্কো স্টেশনের সাবেক প্রধান কর্মকর্তা ড্যানিয়েল হফম্যান বলেছেন, ‘আমার কোনো সন্দেহ নেই যে, এ কাজ পুতিনের নির্দেশেই হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, বিদ্রোহের পর পুতিন তাকে গ্রেপ্তার না করে মিথ্যা নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিলেন যেন প্রিগোজিন স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারেন। আর সেই সুযোগে তাকে হত্যা করা যায়।
যুক্তরাজ্য: ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য অ্যালিসিয়া কেয়ার্নস বলেন, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানে ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের থাকার কথা রাশিয়া যত দ্রুত সবাইকে জানিয়েছে তা থেকেই অনেক কিছু পরিস্কার হয়ে যায়। রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী ওই বিমানটি ভূপাতিত করেছে বলেও সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে। পুতিন আসলে পরিষ্কার বার্তা দিচ্ছেন।
ইউক্রেন: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সহকারী মাইখাইলো পোডোলিয়াক বলেছেন, রাশিয়ার আনুগত্যের বিপক্ষে যেই যাবে তার জন্য ক্রেমলিনের কাছ থেকে এটি একটি সংকেত।  তিনি বলেন, অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার দুই মাস পর প্রিগোজিন ও ওয়াগনারের এ পরিণতি ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে পুতিনের পক্ষ থেকে রাশিয়ার অভিজাতদের কাছে একটি সংকেত। সেটা হলো, সাবধান! বিশ্বাসঘাতকতা মৃত্যুর সমান।
এস্তোনিয়া: এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী কাজা ক্যালাস বলেছেন, ভিন্ন মতপ্রকাশ করলে তাদের এভাবে ভয় দেখাবেন পুতিন।
পোলান্ড: পোলান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেবিগনিউ রাউ রাষ্ট্রীয় নিউজ চ্যানেল টিভিপি ইনফোতে বলেছেন, পুতিনের ক্ষমতাকে যারা চ্যালেঞ্জ করেছে তাদের কেউ স্বাভাবিকভাবে মারা যায় না। এটিকে যে কেউ কাকতালীয় ঘটনা বলে মনে করতে পারে। তবে যাদেরই ভ্লাদিমির পুতিন তার ক্ষমতার জন্য হুমকি বলে মনে করেন তাদের কারও স্বাভাবিক মৃত্যু হয় না। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.