প্রাণঘাতী করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় এক ঐক্যে বিমসটেক

ফাইল ছবি

বিটিসি নিউজ ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন বিমসটেকের সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা। আজ শনিবার (০৬ জুন) সাত দেশের এই জোটের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে নেতাদের এমন ঐক্যের আহ্বান আসে।

বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা বাণীতে একসঙ্গে কাজ করা এবং এই অঞ্চলের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

বাণীতে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বের সামনে এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হিসেবে হাজির হয়েছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতিতে বড় রকমের ধাক্কা দিয়ে এটা এই অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর দীর্ঘমেয়াদি নানামুখী প্রভাব রেখে যাবে। কোভিড-১৯ এর ভয়াবহ প্রভাব মোকাবেলায় দারুন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করতে পারে বিমসটেক। মহামারী পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এই প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগাতে কোনো প্রচেষ্টাই আমাদের বাদ রাখা উচিত হবে না।

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধি, জ্বালানি সহযোগিতা জোরদার, যোগাযোগ বৃদ্ধি, জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং জনস্বাস্থ্য, সন্ত্রাসবাদ-চরমপন্থা মোকাবেলা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা এবং দারিদ্র্য বিমোচনসহ সহযোগিতার প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিমসটেকের সব সদস্য দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

করোনা মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, কোনো দেশ এককভাবে এর (কোভিড-১৯) এত বড় ক্ষতি সামাল দিতে পারবে না। এক্ষেত্রে এই অঞ্চলের সব দেশের সঙ্গে ভারত তার বিশেষায়িত জ্ঞান, সম্পদ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বিনিময় করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোর বৈশ্বিক জিডিপিতে অবদান কম থাকার বিষয়টি তুলে ধরে অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। বাণীতে তিনি বলেন, বিমসটেক সদস্য দেশগুলোতে বিশ্বের জনসংখ্যার ২২ শতাংশের বসবাস হলেও বৈশ্বিক জিডিপিতে এর অবদান মাত্র ৪ শতাংশ। আমি বিশ্বাস করি, এই সংগঠন সদস্য দেশগুলোর অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

বাণিজ্য, প্রযুক্তি বিনিময় এবং মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে সদস্য দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিমসটেক আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি, মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চিও ঠিক একই কথা বলেন।

বিমসটেক নেতারা ভবিষ্যৎ মহামারী বা অন্যান্য দুর্যোগে পরিবহন যোগাযোগ যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্ব আরোপ করেন; বিশেষত সমুদ্র, নৌপথ ও রেল যোগাযোগ বৃদ্ধিতে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

১৯৯৭ সালের ৬ জুন ব্যাংকক ঘোষণার মধ্য দিয়ে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন বা বিমসটেকের যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে কেবল বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড এর সদস্য হলেও পরে মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটান বিমসটেকে যোগ দেয়।

ভৌগলিকভাবে দক্ষিণ এশিয়াকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেছে বিমসটেক; কাজ করছে সার্ক ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃআঞ্চলিক সহযোগিতার একটি সেতুবন্ধ হিসেবে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.