পলাশবাড়ীতে অনাবৃষ্টি ও তাপদাহে ফেঁটে চৌচির আমন ফসলের মাঠ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার কৃষকেরা বৃষ্টির পানির অভাবে আজও আমন চারা রোপন করা শেষ করতে পারেনি। এমন চলতে থাকলে আমন উৎপাদন ব‍্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেগুলো রোপন করা হয়েছে তাতে স‍্যালোমেশিন বা মটরের সাহায্যে পানি সেচ দেয়া হচ্ছে। এতে করে বাড়তি খরচ বহন করতে হচ্ছে কৃষকদের।
কোথাও কোথাও পানি সেচের ব্যবস্থা না থাকায় রোপনকৃত আমনের জমি ফেঁটে চৌচির হয়েছে। যেখানে ভাদ্র মাসে ফসলের জমিতে সবুজের সমারোহ হত। সেখানে রোপনকৃত ধানের চারা কমর সোজা করেই দাঁড়াতে পারছে না। দিন যতই গড়াচ্ছে প্রচন্ড গরম আর প্রখর রোদের তাপে রোপনকৃত আমনের চারা পানি অভাবে নেতিয়ে বা ঝিমিয়ে পড়ছে। কোন কোন কৃষক পানি অভাবে জমিতে আগাছানাশক ও সার প্রয়োগ করতে পারছেন না।
আষাঢ় ও শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। সাধারণত এই দুই মাস সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টির পানিকে কাজে লাগিয়ে কৃষকরা এই মৌসুমে রোপা আমন চাষে ব্যস্ত সময় পার করে থাকেন।
খােঁজ নিয়ে জানা গেছে ,পলাশবাড়ী উপজেলায় টানা প্রায় ২০ দিনের অধিক বৃষ্টি না হওয়ায় পুকুর বা খালের পানি দিয়ে কোনোরকম চাষাবাদ করছেন কৃষকরা। আর যেসব কৃষক গভীর নলকূপ থেকে পানি নিয়ে আবাদ করছেন, তাদের এক দুইদিন পরপরই জমিতে পানির প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ফলে সময়মতো পানি সব কৃষক পাচ্ছেন না।
সময়মতো বৃষ্টি না হলে পানি সঙ্কটের কারণে আমন চাষ হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ফলে আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পলাশবাড়ী পৌরসভার হরিণমাড়ী গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আষাঢ়-শ্রাবণ মাস শেষ হয়ে গেল, কোনো বৃষ্টি নেই। পানি সেচ দিয়ে যেটুকু আবাদ করেছি তাও শুকিয়ে যাচ্ছে। টানা প্রায় ২০ দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় আমার ধানের জমি শুকিয়ে জমি ফেঁটে চৌচির হয়ে গেছে ।
আজ বৃহস্পতিবার স‍্যালোমেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিচ্ছি। বাকি জমি সব পড়েই আছে, কী হবে জানি না। বৃষ্টির পানি ছাড়া ফসল বাঁচানো অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে জানান এই কৃষক।
বরিশাল ও মহদীপুর ইউনিয়নের অনেক কৃষকেরা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বৃষ্টির অভাবে তারা পুরোপুরি জমিতে ধানের চারা রোপন করতে পারেননি। মটর থেকে পানি নিয়ে বেশ কিছু জমিতে চারা রোপন করলেও প্রায় জমিতে আবাদ শুরু করতে পারেননি। আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন কখন বৃষ্টি হবে, তখনই আবাদ শুরু করবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেমা কাওসার মিশু বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান,পলাশবাড়ী উপজেলায় ১৩ হাজার ৮শ ৫৩ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তিনি আরো জানান, আমন ধান কাঁটার পর শরিষা চাষ করবেন তাদের আমরা পরামর্শ দিয়েছি ব্রি-৭১,৭৫ ও ৮৭ জাতের স্বল্প জীবনকাল ধান চাষাবাদ করতে।
এব‍্যাপারে আমরা কৃষকদের প্রণোদনাসহ বিনামুল্যেয় বীজ ও সার দিয়ে থাকি। প্রর্দশনী কৃষকদের মাঝে ৭৬,৭৮ ও ৮০ জাতের বীজ বিতরণ করা হয়েছে।।এছাড়াও ব্রি- ৯৩ ও ৯৪ চাষাবাদ করার পরামর্শ দিয়েছি।
সরেজমিনে ফসলের ক্ষেতে গিয়ে লক্ষ্য করাযায়, অধিকাংশ কৃষকদের পছন্দের ধান বীজ হিসেবে পছন্দ স্বর্না-৫, বর্না ও ব্রি- ১১ জাতের।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর গাইবান্ধা প্রতিনিধি মোঃ শাহরিয়ার কবির আকন্দ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.