পটুয়াখালীতে চুরি হওয়া গুলিসহ ৯টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার-১

পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীতে চুরি হওয়া নয় অস্ত্র, ৪২ রাউন্ড গুলিসহ বিপুল চোরাই মালামাল উদ্ধার এবং একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
গত ৫ নভেম্বর হতে ১৯ নভেম্বরের মধ্যে যেকোনো সময় চোরদল শহরের আরামবাগ এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত  কাস্টমস কর্মকর্তা এ কে এম কবির উদ্দিনের (৭২) বসতঘরের পিছনের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে স্টিলের আলমারি থেকে লাইসেন্স করা পিস্তল, শটগানসহ বিপুল মালামাল চুরি হয়। যা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরে জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে  বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত, আলামত সংগ্রহ করে এবং ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের তৎপর হয়।
পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনা ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গতকাল সোমবার রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল)  মো. সাজেদুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে পুলিশের একট দল রাতব্যাপী অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আরামবাগ এলাকা হতে  চুরি হওয়া অস্ত্র ও মালালসহ দুর্ধর্ষ চোর মো. মনিরুজ্জামানকে (৪৪) পুলিশ গ্রেপ্তার  করতে সক্ষম হয়।
উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে, বেলজিয়ামের তৈরি একটি ১২ বোর শটগান (এসবিবিএল),জার্মানির তৈরি একটি পয়েন্ট ২৫ বোর এনপিপি পিস্তল, ১ রাউন্ড পয়েন্টর ২৫ বোর এনপিপি পিস্তলের গুলি, ৪১ রাউন্ড ১২ বোর শটগানের (এসবিবিএল) কার্তুজ, একটি পুরাতন প্লাস্টিকের হাতলসহ লোহার তৈরি রিভলবার সদৃশ্য খেলনা রিভলবার, একটি লাল-খয়েরি চাকাযুক্ত ট্রলি ব্যাগ, একটি কালো রঙের পুরাতন লাগেজ, একটি কালো রঙের পুরোনো ব্রিফকেস, একটি কালো বড় ব্যাগ, একটি কালো রঙের হাতব্যাগ, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩০টি পুরাতন শাড়ি, ২টি বড় কম্বল, ৫টি কাঁথা, একটি মশারি, দুটি চান্দিনা, তিনটি বোরকা, চারটি বিছানার চাদর, একটি গায়ের শাল, দুটি তোয়ালে, দুটি ওয়াটার হিটার।
এ ছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে এই চুরির কাজে ব্যবহৃত শাবল, হাতুড়ি, প্লাস, কাটিং প্লাস,একটি টর্চ লাইট, একটি সেলাইরেঞ্জ, দুটি লোহার ছেনি।
পুলিশ সুপার জানান, পৌরসভার স্থাপিত সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগহ করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শনাক্ত করে গতকাল রাতে দুর্ধর্ষ চোর মনিরুজ্জামান মুন্নাকে গ্রেপ্তার এবং চুরি যাওয়া অস্ত্র-মালামাল উদ্ধার করতে পুলিশ সক্ষম হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে চুরি করার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
মালার বাদী অবসরপ্রাপ্ত কাস্টমসকর্মকর্তা গত ৫ নভেম্বর বিকেল ৪টায় ডাক্তার দেখানোর জন্য তার স্ত্রী নাসরীন সুলতানাকে নিয়ে ঢাকায় যান। তখন বাসায় কেউ না থাকায় তিনি বাসাটি তালাবদ্ধ করে রেখে যান। এই সুযোগে একই এলাকার চোর মুন্না গত ১৮ নভেম্বর রাতে এই চুরির ঘটনা ঘটিয়েছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামী মুন্না আরো জানান, তিনি আগে কাঠমিস্ত্রির কাজসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িত ছিলেন। বর্তমানে তিনি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রহরী হিসেবে মাস্টাররোলে চাকরি করেন।
এ ঘটনায় সদর থানায় গতকাল মামলা হয়। গ্রেপ্তার করা আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো এবং মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলমান রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপ্‌স) রফিউদ্দিন মোহাম্মদ যোবায়েরসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর পটুয়াখালী প্রতিনিধি মো. নজরুল ইসলাম নজরুল। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.