নয় মাসে অপরাধে জড়িয়ে পড়া খুলনার ৪২ শিশুকে পরিবারে হস্তান্তর

 

খুলনা ব্যুরো: বিগত নয় মাসে খুলনা মহানগরীর আট থানা এলাকায় অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়া ৪২টি শিশুকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ইউনিসেফ’র সহায়তায় জাগ্রত যুব সংঘ বা জেজেএস আয়োজিত এক কর্মশালায় এ তথ্য দেয়া হয়।

পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে বুধবার নগরীর হোটেল ক্যাসল সালামে অনুষ্ঠিত শিশু সুরক্ষা ও শিশু আইন ২০১৩ বিষয়ক এ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কেএমপি কমিশনার মো: হুমায়ুন কবির বলেন, কোন শিশু যাতে অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে সেজন্য পুলিশ বিভাগসহ সব পেশার লোকদের এগিয়ে আসা উচিত।

কর্মশালায় জানানো হয়, গত বছর অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত বিগত নয় মাসে নগরীর বিভিন্ন থানা এলাকায় চুরির সাথে জড়িত ৩৩টি, মাদক বহনের সাথে জড়িত তিনটি, পকেটমারের সাথে জড়িত একটি, সন্দেহমূলক ঘোরাফেরার দায়ে চারটিসহ সর্বমোট ৪২টি শিশুকে আটক করা হলেও তারা যাতে বড় ধরনের কোন অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে সেজন্য ডাইভারশন প্রক্রিয়ায় বা বিকল্প পন্থায় তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

কর্মশালায় বলা হয়, কেএমপির প্রতিটি থানায় একটি করে শিশু বিষয়ক ডেস্ক স্থাপনের জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়া হাতে নেয়া যেতে পারে। এর মধ্যে থানায় একটি করে পৃথক কক্ষ নির্ধারণ, কক্ষটি শ্রেণিকক্ষ উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা, থানা নয় বরং ওই কক্ষটিতে স্কুলের পরিবেশ বজায় রাখা, প্রয়োজনে পৃথক রং করা এবং সর্বোপরি থানা ভিত্তিক পৃথক ব্যবস্থা নেয়ারও প্রস্তাব দেয়া হয়।

তবে এজন্য শুধু বেসরকারি সংস্থার ওপর নির্ভর না করে সরকারের পক্ষ থেকেও পৃথক বাজেট রাখার দাবি জানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে ইউনিসেফের পক্ষ থেকে সরকারের সাথে কথা বলা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।

জেজেএস’র নির্বাহী পরিচালক এটিএম জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সোনালী সেন, ইউনিসেফ খুলনার হেড অফ জোন মোঃ কফিল উদ্দিন, খুলনা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শেখ মাহেনুল হক এবং ইউনিসেফ খুলনার চাইল্ড প্রোটেকশন অফিসার জামিল হাসান। কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন ছিলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক(প্রবেশন) মোঃ শফিকুল ইসলাম। কর্মশালাটি পরিচালনা করেন জেজেএস’র সমন্বয়কারী এম এম চিশতী।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কেএমপি কমিশনার শিশু সুরক্ষায় পুলিশ ও প্রবেশন অফিসারের দায়িত্ব বিষয়ে আলোকপাত করেন। শিশু সুরক্ষায় প্রবেশন অফিসার ও পুলিশ অফিসারদের শিশু আইন ২০১৩ বিষয়ে বিস্তারিত ধারনা অর্জন এবং আইনের সংস্পর্শে ও সংঘর্শে আসা শিশুদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ন ও  স্নেহসুলভ আচরণের আহবান জানান।

প্রতিটি থানায় শিশু বিষয়ক ডেস্ক আরো কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য প্রধান অতিথি সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জদের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কেএমপি’র খালিশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সরদার মোশাররফ হোসেন, আড়ংঘাটা থানার ওসি কাজী রেজাউল করিম, দৌলতপুর থানার ওসি কাজী মোস্তাক আহমেদ, সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি মো: মোমতাজুল হক, লবনচরা থানার ওসি মো: লিয়াকত আলী, সদর থানার ওসি মো: হুমায়ুন কবির, হরিণটানা থানার ওসি মো: নাসিম খান এবং খানজাহান আলী থানার ওসি এসএম শফিকুল ইসলাম, জেলা প্রবেশন অফিসার ফাহিমা মুন্নি, খুলনা শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবু জাফরসহ কেএমপির সকল থানার শিশু বিষয়ক পুলিশ অফিসার, জেলা সমাজসেবা অফিসারবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ ও অন্যান্যরা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.