নামে বেনামে বিপুল সম্পদ শিক্ষা কর্মকর্তার, দুদকে অভিযোগ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ বোরহান উদ্দীনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্ম, অনিয়ম, দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ স্বেচ্ছাচারীতার অভিযোগ তুলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পঞ্চগড়ের এক সহকারী শিক্ষক।
গত ২৯ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বরাবরে এই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই শিক্ষক।
লিখিত অভিযোগে শিক্ষক জানান, শিক্ষা কর্মকর্তা বোরহান উদ্দীন ইতোপূর্বে পঞ্চগড় সদর উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্য ও ঢাকার বিভিন্ন দপ্তরে দালালী করে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। ঢাকায় ফ্ল্যাট, প্লটসহ পঞ্চগড়ে নামে বেনামে জমি জায়গা, কয়েকটি চা বাগান, গরু ও মৎস খামার করেছেন। একটি চা কারখানায় রয়েছে ৫৫ শতাংশ মালিকানাও। এছাড়া স্ত্রী-সন্তানরা ঢাকায় রাজকীয় জীবনযাপন করেন বলেও জানানো হয়েছে।
অভিযোগে জানানো হয়, শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বোরহান উদ্দীন অধিকাংশ সময় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে ঢাকা ও পঞ্চগড়ে অবস্থান করে। কর্মস্থলে উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে দাপট দেখিয়ে চলাফেরা করে। হুমকি-ধামকি দেয় কর্মচারীদের। মহিলা শিক্ষিকাদেরও নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, পঞ্চগড়ে কয়েকটি চা বাগান (নিজামাবাদ, চাকলাহাট ও ভিতরগড় মৌজা), গরুর খামার (মাধুইপাড়া), মৎস্য খামার, নামে বেনামে অনেক জমিজমাসহ ঢাকাতে কোটি টাকা মূল্যের কয়েকটি ফ্লাট (১/১২ ইকবাল রোড, মোহাম্মদপুর এবং ২৫২/২এ, রোড ৬, মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোঃ, ঢাকা), সাভারে জমি দামী দুটি গাড়ী ও নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে (পঞ্চগড়ের ইসলামী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ঢাকায় ন্যাশনাল ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক) বিপুল অর্থসম্পদ বানিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তা বোরহান উদ্দীন। বোরহান একজন নারী লিপ্সু ব্যাক্তি বলেও অভিযোগে দাবি করা হয়।
অভিযোগে আরো জানানো হয়, ৫৫ শতাংশ মালিকানা থাকার সুবাদে উত্তরা গ্রীণ টি ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ এর এমডির নিকট হতে এক কোটি ১৩ লাখ টাকা ধার নিয়ে আজ অব্দি পরিশোধ না করে টারবাহানা করে চলছে বোরহান।
এছাড়া বিভিন্ন সময় নানা কারণ দেখিয়ে এই চা কারখানার বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বর্তমান কারখানাটি ভীষন সংকটে। শুধু তাই নয় কারখানার এমডি ইন্তেকালের পর পুরো কারখানা দখলেরও পায়তারা করছে বোরহান উদ্দীন।
কারখানার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক, তারিকুল ইসলাম এবং এমডির ছেলে মোহাইমিনুল হককে বিভিন্ন ভয়ভীতিসহ প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। এসব নিয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় একাধিক অভিযোগও রয়েছে। বর্তমান চা কারখানাটি যাতে চালু না করা হয় এজন্য উঠে পড়ে লেগেছে বোরহান। কারখানার মালিক, কর্মচারী, শ্রমিকদের আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে। চাষীদের কাঁচা চা পাতা সরবরাহে নিষেধ করা হচ্ছে।
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত বোরহান উদ্দীনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এড়িয়ে যান।
দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আশিকুর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, অভিযোগ আসলে কমিশনের উপর সেটা নির্ভর করে যে অনুসন্ধান হবে কি-না। যদি সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ দেওয়া হয়, তাহলে সেটা কার্যক্রমের মধ্যে পড়বে। তবে এ ধরনের অভিযোগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ আসতে সময় একটু বেশি লাগে।
উল্লেখ্য, বর্তমান দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় কর্মরত আছেন। সেখানেও তার বিরুদ্ধে অফিসে নিয়মিত উপস্থিত না থাকাসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিলো।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর পঞ্চগড় প্রতিনিধি শেখ সম্রাট হোসাইন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.