নাটোরে ১০ এপ্রিল থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত করোনা উপসর্গে ৯ জনের মৃত

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরে গত ১০ এপ্রিল থেকে গতকাল সোমবার (২৯ জুন) পর্যন্ত করোনা উপসর্গ নিয়ে ৯জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৬জন পুরুষ ও ৩জন নারী। এর মধ্যে নাটোর সদরে ২জন, লালপুরে ২জন, সিংড়ায় ২জন বাগাতিপাড়ায় ২জন ও নলডাঙ্গায় ১জন।

প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়,গত ১০ এপ্রিল করোনা উপসর্গ নিয়ে নটোরের সিংড়া উপজেলার কুড়ি পাকুড়িয়া গ্রামের এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় ওই পুরো গ্রামকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়।

সিংড়া উপজেরা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আমিনুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, কিুড়িপাকুড়িয়া গ্রামের গৃহবধূ আরজিনা খাতুন-৩৫কে শ্বাস কষ্ট ও ডায়বেটিক রোগ নিয়ে বগুড়া জিয়াউর রহমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের করোনা ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১০ এপ্রিল সকালে তার মৃত্যু হয়।

অপরদিকে গত ২০ এপ্রিল বাগাতিপাড়া উপজেলার নওশেরা (আরাজিমারিয়া) গ্রামের বিনয় চন্দ্র মন্ডলের ছেলে সুকুমার মন্ডল-৩২ ৪/৫দিন ধরে সর্দি জ্বর কাশিতে ভুগছিলেন। এছাড়া তিনি এ্যাজমার রোগী ছিলেন। এ অবস্থায় ওই দিন রাতে দুটোর দিকে তার মৃত্যু হয়।

এঘটনায় ওই বাসা সহ আশে পাশের ৭টি বাড়ি লক ডাউন করা হয়েছিল। গত ২৮মে নাটোরের নলডাঙ্গায় ঢাকা ফেতর সাদ্দাম হোসেন নামের এক রিকসা চালকের মৃত্যু হয়েছে। ওই দিন সকাল ৯ টার দিকে জ্বর সর্দি ও শ্বাসকষ্ট জনিত কারনে অসুস্থ্য হলে স্বজনরা নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে পথেই মারা যায়।খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশ মৃতের বাড়িতে লাল পতাকা টাঙ্গিয়ে লকডাউন করে। গত ৩০ মে নাটোরে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।

নাটোর হাসপাতালের আইসলেশান ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোররাতে তার মৃত্যু হয়। মৃত গৃহবধূ জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার সাতশৈল গ্রামের উজ্জল হোসেনর স্ত্রী রুমা বেগম-২২। গত ৬জুন নাটরের একজন চিকিৎসকের বাবা করোনা উপসর্গ নিয়েরাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। প্রচন্ড শ্বাস কষ্ট থাকায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬জুন দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত ব্যক্তির নাম জাকির হোসেন। তাঁর ছেল ঢাকা উত্তরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক।

গত ১১জুন নাটোরের সিংড়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার গজেন্দ্রনাথের ছেলে অরুন কুমার দাস ওরফে অনিক (৫০)। তিনি তিনদিন আগে সিংড়ার মমাদারীপুরে তাঁর এক স্বজনের বাড়িতে ঢাকা থেকে এসেছলেন। অরুন কুমার একটি ওষধ কো¤পানীর প্রতিনিধি ছিলেন।

গত ১১জুন বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টার দিকে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাঁর স্বজনরা নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গত ১৮ জুন নাটোরের লালপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে মহসিন আলী(৫৫) নামে একজন মারা গেছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্বাস কষ্ট ,সর্দি ও জ্বর নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে যাওয়ার আগেই মৃতের দাফন সম্পন্ন হয়।

গত ২৪ জুন নাটোরের লালপুর করোনা উপসর্গে আকলিমা নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। মৃত আকলিমা বেগম(৭০) নওপাড়া এলাকায় ওসমান মন্ডলের স্ত্রী। তিনি করোনা উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন।

সব শেষ গতকাল সোমবার (২৯ জুন) নাটোর সদর উপজেলার তেবারিয়া আরমান মোড়ে করোনা উপসর্গ নিয়ে লোকমান হোসেন (৬০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। মৃত লোকমান হোসেন ঢাকায় কাপড় বিক্রির ব্যবসা করতেন । তিনি গত রবিবার করোনার উপসর্গ জ্বর ,সর্দ্দি, কাশি নিয়ে আরমান মোড়ে বাড়িতে আসে। গতকাল সোমবার সকালে তার অবস্থার অবনতি হলে নাটোর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তার পৈতৃক বাড়ি নাটোর সদর উপজেলার চাঁদপুরে । তিনি ওই গ্রামের মৃত সোলেমান হোসেনের ছেলে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.