নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরে বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলীকে লাঞ্চিত করার মামলায় অভিযুক্ত ঠিকাদার ও তার সঙ্গীদের ১০ দিনেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলছে অভিযুক্তরা আত্মগোপনে থাকায় তাদের গ্রেফতার করা যায়নি।
গত ৬ মার্চ নির্মাণ কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় বিল দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করায় শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করা হয় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) নাটোর (ক্ষুদ্রসেচ) জোনের সহকারী প্রকৌশলী নাসিম আহমেদকে।
সুমি কনস্ট্রাকশন এর স্বত্তাধিকারী রওশন আলম মাহমুদ রাজু এবং তার অনুসারীরা মিলেওই দিন দুপুর ১২:৩০ টার দিকে ভুক্তভোগী সহকারী প্রকৌশলীর কক্ষে প্রবেশ করে তাকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে।
এঘটনায় রাজুসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে একই দিন রাতে নাটোর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নাসিম আহমেদ। এদিকে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিএডিসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
অপরদিকে গত ১০ দিনে ও ঠিকাদার ও তার সঙ্গীদেও গ্রেফতারনা করায় নিন্দা ,প্রতিবাদ এবং কাজের নিরাপত্তার জন্য দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন বিএডিসির কর্মকর্তরা।
আহত প্রকৌশলী নাসিম আহেমদ বলেন, ৬মার্চ দুপুরে ঠিকাদার রাজু এবং তার দুজন অনুসারী তাঁর অফিস ও রুমে প্রবেশ করে। এর পর রাজু “পাবনা-নাটোর-সিরাজগঞ্জ জেলায় ভূ-উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের” আওতায় একটি স্কীমে চলমান ব্যারিড পাইপ লাইন নির্মাণ কাজের বিল দিতে বলেন এবং উচ্চ বাক্য করেন। কিন্তু কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় সংশ্লিষ্ট কৌশলী বিল দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং পুরো কাজ সম্পূর্ণ করে বিল দাখিল করতে বলেন। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে ঠিকাদার রাজু লাথি দিয়ে প্রকৌশলী নাসিম কে চেয়ার থেকে ফেলে দেন। এর পর রাজুর এক সহযোগী রুমের দরজা বন্ধ করে দেন এবং তিন জন মিলে এলো পাথাড়ি ভাবে লাথি ও কিল ঘুষি দিতে থাকেন। নাসিমের আর্তচিৎকার শুনে তার দপ্তরের অন্যান্য সহকর্মীরা দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে এবং নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই তিনি নিজে বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ‘গত ১০ দিনে ও অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়ায় তিনি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগাসহ অভিযুক্তদেও গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেন।
অপর দিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার রওশন আলম মাহমুদ রাজু বলেন, তিনি এক মাস আগেই কাজটি শেষ করে বিল উত্তোলনের জন্য কাগজপত্র দাখিল করেছেন। কিন্তু সহকারী প্রকৌশলী নাসিম আহমেদ বিল না দিয়ে টাল বাহানা শুরু করেন। ঘটনার দিন তার সাথে দেখা করলে তিনি ৩ পার্সেন্ট উৎকোচ দাবি করেন। কিন্তু তিনি দিতে অস্বীকার করলে উভয়ের মদ্যে বাকবিতন্ডা হয়। কিন্তু কোন রুপ লাঞ্চনার ঘটনা ঘটেনি। উল্টো অফিসের স্টাফরাই তাকে লাঞ্চিত করে।
নাটোর বিএডিসির নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তার অফিসে ঢুকে সহকারি প্রকৌশলী নাসিম আহমেদকে লাঞ্চিত করা হয়েছে। এতে করে অফিসে কাজ করার ক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়াসহ নিরাপত্তা হীনতা দেখা দিয়েছে। তিনি অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার ওবিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে বিএডিসি’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৗশলী ও বিএডিসি প্রকৌশলী সমিতির সভাপতি প্রকৌশলী শিবেন্দ্র নারায়ন গোপ বিটিসি নিউজকে বলেন, একজন কর্মকর্তার ওপর হামলার ১০ দিনে ও আসামী গ্রেফতার না হওয়া দুঃখ জনক। তিনি অভিযুক্ত ঠিকাদারকে গ্রেফতার এবং বিএডিসি সহ অন্যান্য সরকারী দপ্তরে কোনো কাজ করার সুযোগ না পায় সে ব্যাপারে ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
এ বিষয়ে নাটোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি নাসিম আহমেদ বিটিসি নিউজকে বলেন,অভিযুক্তদের বাড়ি পাবনা জেলায়। আমরা দুইদিন অভিযান চালিয়ে ও অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করতে পারিনি। তবে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.