নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে : মির্জা ফখরুল

ঢাকা প্রতিনিধি: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা স্পষ্ট করে বলছি, একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে দিতে হবে। খুব পরিষ্কার কথা, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা না দিলে এখানে কোনো নির্বাচন হবে না। আর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যুবদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক যুব সমাবেশে ফখরুল এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সব ক্ষেত্রে দুর্নীতির কারণেই অর্থনীতি এ অবস্থায় এসে পড়েছে। পায়রা বন্দর সফল হবে না কারণ সেখানে নাব্যতা সংকট রয়েছে আর ড্রেজিং বাবদ যে টাকা খরচ করা হচ্ছে তা লুটপাটের জন্য।’
পায়রা বন্দর উদ্বোধনের ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই পায়রা বন্দরের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন- আমাদের বিরোধীরা বলে যে রিজার্ভের টাকা কোথায় গেলো। অবশ্যই আমরা জিজ্ঞাস করতে চাই যে, রিজার্ভের টাকা কোথায় গেলো? তিনি উত্তর দিয়েছেন, রিজার্ভের টাকা চিবিয়ে খাওয়া হয়নি।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘রিজার্ভের টাকা চিবিয়ে তো খান নাই। গিলে ফেলেছেন। রিজার্ভের টাকা আপনারা গিলে ফেলেছেন। পায়রা বন্দরে খরচ করা হয়েছে। পায়রা বন্দরে খরচ করার জন্য রিজার্ভের টাকা না। রিজার্ভের টাকা হচ্ছে, দেশে যখন অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দেবে, তখন আপনি সেই সঙ্কটে ব্যবহার হবে। এছাড়া, অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পায়রাবন্দর কার্যক্রম হতে পারে না। কারণ পানির যে গভীরতা দরকার, সেই গভীরতা সেখানে নাই।’
নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে খেলা হবে না বলে ক্ষমতাসীনদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘কেনো? এতোই যদি খেলতে চাও, বলে কি খেলা হবে। কিসের খেলা হবে? কিসের খেলা? ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলেছে। খেলা হয় না। খেলা তখনই হয় যখন লেভেল প্লেইং ফিল্ড থাকে। খেলা তখন হবে যখন সরকার পদত্যাগ করবে এবং যখন একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেবে তখনই সেই নির্বাচনে খেলা হবে। এ ছাড়া কোনো খেলা খেলতে দেওয়া হবে না। এদেশের মানুষ আর কখনোই সেটা দেবে না।’
তিনটা সমাবেশ করে বিএনপি মনে করছে যে ক্ষমতায় চলে যাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘তিনটা সমাবেশ করে আমরা ক্ষমতায় যাব বলে মনে করছি না। আমরা মনে করছি, তিনটা সমাবেশ করেই আপনাদের এতো কম্পন শুরু হয়েছে, সেই সমাবেশগুলো বন্ধ করার জন্য আপনারা বাস ও পরিবহণ ধর্মঘট করাচ্ছেন। বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বন্ধ করার জন্য আপনারা আপনাদের পেটোয়া ইউনিয়নকে দিয়ে ধর্মঘট ডাকছেন।’
তিনি বলেন, ‘বরিশালে ধর্মঘট দিয়েছে, পাঁচ দিন আগে। যাতে সমাবেশ পণ্ড করা যায়। রংপুরে ধর্মঘট দিয়েছে, যাতে রংপুরের সমাবেশ বন্ধ করা যায়। আমি বাস মালিক ও শ্রমিকদেরকে বলতে চাই, আপনারা সব সময় জনগণের সেবা করেন। আপনারা জনগণের সঙ্গে বরাবর ছিলেন। কিন্তু কার ইঙ্গিতে এবং কাদেরকে সহায়তা করতে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শক্তি, যারা আপনার সমস্ত কিছু কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের সাহায্য করার জন্য আপনারা এই কাজটা করবেন না। জনগণের সঙ্গে থাকুন। জনগণের ভোগান্তি করবেন না।’
সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুপুর ১টা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যুবদলের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা ব্যানার, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত ফেস্টুন, জাতীয় ও দলীয় পতাকাসহ জড়ো হতে শুরু করেন। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে, লাল, সবুজ, হলুদ এবং সাদাসহ বিভিন্ন রঙের ক্যাপ পরেও সমাবেশ অংশ নেন নেতাকর্মীরা।
এদিকে সমাবেশকে ঘিরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং এর আশপাশ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেন বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের মঞ্চে দুটি চেয়ার খালি রাখা হয়। সেই দুটি চেয়ারের একটিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং আরকেটিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি রাখা হয়।
যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্নার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

 

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.