নকল সরবারহকরতে সম্মত না হওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দুই পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে আজ রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) নকল সরবরাহ করতে সম্মত না হওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
এতে ২ ছাত্রীসহ ৩ জন পরীক্ষার্থী আহত হয়। এদের ২জন পরীক্ষার্থীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায় পাঠানো হয়েছে। অপর একজন কসবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। গুরুতর আহত দুই পরীক্ষার্থী পরবর্তী পরীক্ষাসমূহে অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পরেছে।
আহতরা হল কসবা উপজেলার সৈয়দাবাদ মনিরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীনি ও সৈয়দাবাদ গ্রামের বাসিন্দা সোনিয়া আক্তার (১৬), তন্নি আক্তার (১৬) ও মো. আসিফ মিয়া (১৬)। তাদেরকে প্রথমে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে গুরুতর অবস্থায় সোনিয়া আক্তার ও তন্নি আক্তারকে ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহতদের পরিবার, উপজেলা প্রশাসন, বিদ্যালয় ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, সৈয়দাবাদ মনিরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয়ে।
আজ রোববার ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা ছিল। ওই পরীক্ষায় গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থীদের একজন আত্নীয় বাহির থেকে জানালা দিয়ে নকল সরবরাহ করতে সৈয়দাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এক পরীক্ষার্থীকে অনুরোধ জানায়।
এ সময় ওই পরীক্ষার্থী রাজী না হওয়ায় পরীক্ষা হলে তাকে মারধোর করে গোপীনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা সৈয়দাবাদ মনিরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী মন্সুর খানসহ ওই পরীক্ষার্থীরা বিষয়টি কেন্দ্র সচিব ও গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জহিরুল হককে অবহিত করেন।
তিনি এবিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। পরে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় আবারও গোপীনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষর্থীরা এবং গ্রামের কিছু বখাটে ছেলে তাদের উপর চড়াও হয় এবং তাদেরকে বেদম প্রহার করে।
এতে সৈয়দাবাদ মনিরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী আহত হয়। খবর পেয়ে কসবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও কসবা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সৈয়দাবাদ মনিরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী মন্সুর খান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, জানালা দিয়ে গোপীনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের নকল সরবরাহে রাজি না হওয়ায় এ অনাকাঙ্খিত ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, গুরুতর আহত দুই পরীক্ষার্থী সোনিয়া আক্তার ও তন্নি আক্তারের পরবর্তী পরীক্ষা দেয়া অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও  পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব মো. জহিরুল হক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি জানানোর পর পরীক্ষার্থীসহ অন্যরা বিদ্যালয় থেকে চলে যায়।
বিষয়টি মিমাংশার জন্য আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে এক পক্ষ অপর পক্ষকে হামলা চালায়। এ সময় তিনিসহ বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন বলে দাবী করেন।
গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও শহীদবাবুল উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এস.এম মান্নান জাহাঙ্গীর বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, একজন পরীক্ষার্থী অন্য পরীক্ষার্থীর খাতা দেখানোকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি ও সংঘর্ষ হয়েছে।
কসবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, নকল সরবরাহ করতে গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন পরীক্ষার্থী অনুরোধ জানালে রাজী হয়নি সৈয়দাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এক পরীক্ষার্থী। এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে মনিরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ পরীক্ষার্থী আহত হয়েছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে  বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, কেন্দ্র সচিবসহ অজ্ঞাত ৩০ জনকে আসামী করে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.